Posted by ctg24bd.com Desk::
বন্দরনগরী চট্টগ্রামের পার্বত্য ফটিকছড়ির দাঁতমারি এলাকায় দেশের সর্ববৃহৎ সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প হচ্ছে। ৩০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন এ প্রকল্প স্থাপনের প্রাথমিক প্রক্রিয়া হিসেবে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে প্রতিবেদন চাওয়া হয়। এরই আলোকে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সামসুল আরেফিন স্বাক্ষরিত একটি প্রতিবেদন গত ৫ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে পাঠানো হয়।
প্রকল্পটি সম্পন্ন হলে তা থেকে ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ মিলবে। সূত্র মতে, চট্টগ্রামে বড় ধরনের সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপনের জন্য চাওয়া প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে ইতিমধ্যে জমা দিয়েছে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে আগামী ২০২০ সালের মধ্যে ৬০ লাখ বাড়িতে সৌরবিদ্যুৎ নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তারা। যা বর্তমান উৎপাদনের তুলনায় দ্বিগুণ। এরই অংশ হিসেবে সরকার জরুরি ভিত্তিতে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে মনোযোগী হয়েছে।
সূত্র মতে, ইলেক্ট্রিসিটি জেনারেশন কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (ইজিসিবি) প্রস্তাবিত এ প্রকল্পের জন্য ১১৮ একর পতিত খাস জমি বন্দোবস্তের বিষয়ে মতামত চাওয়া হয়। ফটিকছড়ির দাঁতমারা ইউনিয়নের উত্তর বারমাসিয়া মৌজায় উল্লেখিত ভূমির অবস্থান।
ফটিকছড়ির সহকারী কমিশনারের (এসি ল্যান্ড) প্রস্তুত করা এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর বারমাসিয়া মৌজার ১১৭ দশমিক ৫৯ একর টিলা শ্রেণীর ভূমি বিএস ১নং খতিয়ানে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ডেপুটি কমিশনারের নামে রেকর্ড করা। এই ভূমি বনবিভাগের পিএফ (প্রোটেক্টেড ফরেস্ট) এর অন্তর্ভুক্ত। কিছু জমিতে বিভিন্ন ব্যক্তি আকাশী ও অন্যান্য গাছ রোপণ করেছেন। উল্লেখিত টিলা শ্রেণির জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে এবং বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সাথে পরামর্শ করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে বলে এসি (ল্যান্ড) কর্তৃক দেয়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এদিকে দেশের সবচেয়ে বড় এ সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে চট্টগ্রামে বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তন আসবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ৮১ শতাংশই আসে সৌরবিদ্যুৎ থেকে। বর্তমানে দেশে মোট সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ২০ মেগাওয়াট। এর অধিকাংশই ব্যবহৃত হয় পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায়। উল্লেখিত ২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ এর মধ্যে দেশে উৎপাদিত সৌর প্যানেল থেকে বিদ্যুৎ আসে ৫ মেগাওয়াট। আর আমদানি করা সৌর প্যানেল থেকে উৎপাদন করা হয় ১৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। সরকার ২০২০ সালের মধ্যে ১০ শতাংশ বিদ্যুৎ সৌর ও বিকল্প ব্যবস্থা থেকে উৎপাদন করার টার্গেট ঘোষণা করেছে।
বাংলাদেশে সরকারি হিসেবে প্রায় ৪০ লাখ বাড়িতে সোলার হোম সিস্টেম রয়েছে। উদ্যোক্তারা মনে করছেন আগামী চার বছরে তা দ্বিগুণ হবে। কারণ জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিডের আওতার বাইরে এখনো বহু মানুষ রয়ে গেছে।
পিডিবির তথ্য মতে, দেশে বর্তমানে ৮ থেকে সাড়ে ৮ হাজার মেগাওয়াটের মতো বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। আর চট্টগ্রামের ১৩৫৮ মেগাওয়াটের উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন সরকারি বেসরকারি ১২টি বিদ্যুৎকেন্দ্রে রয়েছে। যাতে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয় চাহিদার অর্ধেকেরও কম।
এদিকে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের ব্যাপারে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ বলেন, সৌরবিদ্যুৎ খুব কম খরচে উৎপাদন করা যায়। তাছাড়া এ বিদ্যুৎ পরিবেশসম্মতও।
তিনি আরো বলেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কাছে বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছাতে এর বিকল্প নেই। কৃষিতে মোক্ষম সুবিধা হিসেবেও এ বিদ্যুৎকে কাজে লাগানো যাবে
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন