পাপীকে নয়,পাপকে ঘৃণা কর।
*****************************
এই নশ্বর পৃথিবীতে কোন কিছুই চিরস্থায়ী নয়,তা জেনেও আমরা সবাই যে যার ইচ্ছেমত দিনাতিপাত করছি। কেউ কুড়েঁঘরে,কেউ দালানকোটায় কেউ বা আবার শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে। যাঁরা দালান কোটা বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে বসবাস করে তারাও মানুষ, যারা মাটির ঘর বা কুঁড়েঘরে বসবাস করে তারাও মানুষ পার্থক্য শুধু জীবনধারন বা বসবাসের ধরনে। এ পার্থক্যটুকু কেন হয়? একটু চিন্তা করলেই তা সকলের কাছে বোধগম্য হবে। পার্থক্য শুধুমাত্র আয়ের উৎসে। যারা দালান কোটা বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে বসবাস করে তারা হয়তো অধিকাংশই প্রভাবশালী নেতা বা বড় ব্যবসায়ী। তাদের কাছে যারা নিম্নশ্রেণীর লোক এবং যারা মাটির ঘর বা কুঁড়ে ঘরে বসবাস করে তাদের অস্তিত্ব নগণ্য। ফলে পরস্পরের মধ্যে দূরত্ব বেড়ে যায়, ঘৃণার জন্ম নেয় এবং সর্বোপরি পারস্পরিক সম্পর্ক ও সম্মানবোধ কমে যায়, নিম্নশ্রেণির ভালো মানুষ গুলোর দৃষ্টিভঙ্গিও বিগড়ে যায়, তারাও তাদের জীবনমান উন্নয়ন করতে চায়,ফলে তারা বিভিন্ন পাপ কাজে লিপ্ত হয়ে যায়, ফলে সমাজ তথা দেশে নেমে আসে অশান্তি, বিরাজ করে অস্থিতিশীল পরিবেশ ও অরাজকতা। কোন মানুষ জন্ম থেকেই পাপী হয়ে জন্মায় না,পরিবেশ ও পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে সে পাপ কাজ করতে বাধ্য হয়। কিন্তু আমরা একবারের জন্যও ভাবিনা একটা পাপকাজ হাজারো পাপকাজের জন্ম দেয়। আমরা সবসময় যে পথে সহজে অর্থ উপার্জন করা যায় সেই পথটাই বেছে নিই। যারা বৈধ পথে অর্থ উপার্জন করে তাদের অভাব বেশি,আর যারা অবৈধ পথে অর্থ উপার্জন করে তাদের অভাব নেই বললেই চলে এটাই বর্তমান সমাজের প্রেক্ষাপট। কথায় আছে,' পাপ বাপকেও ছাড়ে না'। এই চিরন্তন সত্য কথাটা আমরা বেমালুম ভুলে যায়। আমরা একবারের জন্যও চিন্তা করি না যে পথে আমরা অর্থ উপার্জন করে পরিবার-পরিজন নিয়ে দিনাতিপাত করছি সেটা কী ঠিক পথ নাকি ভুল পথ? লোভ মানুষকে ভুল পথে পরিচালিত করে। যেকোন মানুষ যদি লোভকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে তাহলে সমাজ তথা দেশে পাপ কাজ অনেকাংশেই কমে যাবে, সমাজে ফিরে আসবে শান্তি, কমে যাবে সমাজ বিরোধী কর্মকাণ্ড, সর্বোপরি দেশ পাবে একটা উন্নত ও সমৃদ্ধ জাতি। তাই দেশের করোনার এ ক্রান্তিলগ্নে সুন্দর সমাজ ও দেশ গঠনে ব্রতী হয়ে সকলকে পাপ কাজ থেকে বিরত থাকা উচিত।
সুমন মজুমদার।