রবিবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০১৭

টিসুর জীবন বাচাঁতে এগিয়ে আসুন, মানবি সাহায্যের আবেদন


২টি কিডনী অকেজো হওয়া একজন রোগীর জন্য মানবিক সাহায্যের আবেদন করেছেন তার পরিবার। রোগীর নাম টিসু দাশ (২৭)।
তিনি উপজেলার পদুয়া জলদাশ পাড়ার হিমাংশু দাশের পুত্র।
বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কিডনী বিভাগের (ওয়ার্ড নং- ১৭, বেড নং- ৬) ডাঃ ছৈয়দ মাহতাবুল ইসলামের তত্ত্বাধানে চিকিৎসাধীন আছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে দেশের বাহিরে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ডাক্তার।
উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রায় ১০ লাখ টাকা দরকার হতে পারে বলে জানিয়েছেন ডাক্তার। কিন্তু অসহায় পরিবারের পক্ষে এতো টাকা যোগাড় করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই সমাজের সকল শ্রেণীর লোকজনের কাছে আর্থিক সাহায্যের আবেদন করেছেন তার পরিবার।
সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা : রতন কান্তি দাশ (রোগীর বড় ভাই) ০১৮১৫-০২১০৪১, বিকাশ একাউন্ট নং- ০১৮৩২৬৬৮৭৯০ (ওয়াসিম হায়দার), ব্যাংক হিসাব নং- S/A 1101120027861, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক লিঃ, পদুয়া শাখা, লোহাগাড়া, চট্টগ্রাম। সূত্র- লোহাগাড়ানিউজ২৪.ক

সাত খুন: সর্বোচ্চ সাজার প্রত্যাশায় নিহতদের পরিবার

Posted by B.K

জাতীয় ২৪ ডেক্স:তিন বছর আগে নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর সাত খুনের মামলার রায় হতে যাচ্ছে সোমবার; স্বজন হারানো পরিবারগুলো বলছে, খুনিদের প্রাণদণ্ড হলেই বিচার পাবেন তারা। 

কেবল নিহতদের পরিবার নয়, নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেন সোমবার সকালে কী রায় দেন, তা জানার অপেক্ষায় রয়েছে পুরো বাংলাদেশ।

সাত খুনের ঘটনায় নিহত দুইজনের পরিবারের পক্ষ থেকে দুটি আলদা মামলা হয়েছিল ২০১৪ সালে। দুই মামলার বিচার চলে একসঙ্গে; বিচারক গত ৩০ নভেম্বর চূড়ান্ত যুক্তিতর্ক শুনে রায়ের দিন ঠিক করে দেন।

রায়ের আগের দিন রোববার নারায়ণগঞ্জের সাবেক প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, অভিযুক্ত র‌্যাব কর্মকর্তাসহ অন‌্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিই তার চাওয়া।

“দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে আর কেউ এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটাতে সাহস পাবে না। আর কেউ স্বামী হারা হবে না, আর কোনো সন্তান বাবা হারা হবে না, আর কোনো মায়ের বুক খালি হবে না।

সেলিনা ইসলাম বিউটি

“আমরা আদালতের কাছে প্রত্যাশা করছি, আসামিদের যেন সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়,” বলেন তিনি।
কারাগারে থাকা আসামিদের পাশাপাশি পলাতকদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান বিউটি, যিনি স্বামীর মৃত‌্যুর পর কাউন্সিলর নির্বাচিত হলেও গত ডিসেম্বরের ভোটে হেরে যান।

২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল দুপুরে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামের সামনে থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নজরুল ইসলামসহ পাঁচজনকে অপহরণ করা হয়।

একই সময়ে একই স্থানে আরেকটি গাড়িতে থাকা নারায়ণগঞ্জ আদালতের প্রবীণ আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তার চালককে অপহরণ করা হয়।

ঘটনার তিন দিন পর বন্দর উপজেলা শান্তির চর এলাকায় শীতলক্ষ্যা থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় সাত জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। প্রত্যেকের পেটে ছিল আঘাতের চিহ্ন; প্রতিটি লাশ ইটভর্তি দুটি করে বস্তায় বেঁধে নদীতে ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

সেখানে চার সহযোগীসহ নজরুল লাশ মেলার পর সেলিনা ইসলাম বিউটি পাঁচজনকে অপহরণের পর হত‌্যার অভিযোগে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি মামলা করেন।

সপ্তাহখানেক পর একই অভিযোগে অপর মামলাটি করেন আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বিজয় পাল বলেন, “আমরা আমাদের স্বজনদের হারিয়েছি। যে কোনো হত্যাকাণ্ডেরই শাস্তি হওয়া উচিত। আমরা চাই, যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি- মৃত্যুদণ্ড হোক।”

একজন ‘ভালো নাগরিক’ হিসেবে চন্দন সরকারের ‘সুনাম ছিল’ মন্তব‌্য করে তার জামাতা বলেন, “যতদূর জানতে পেরেছি, তার সামনে একটা ঘটনা ঘটছিল, তিনি সেটার প্রতিবাদ করতে গিয়েই হত্যার শিকার হন।”

বিজয় বলেন, “আদালতের উচিত, এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করা, যেন কেউ আর এ ধরনের হত্যাকাণ্ড ঘটানোর চিন্তাও করতে না পারে।”

আরেক মামলার বাদী বিউটি বলেন, মামলার কারণে তার পরিবারকে নানাভাবে হুমকি ধামকি দেয়া হচ্ছে।

“আগেও হত্যার হুমকি দিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আমরা এখনও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি,” বলেন তিনি।

সাত খুনের দুই মামলার তদন্ত শেষে নারায়ণগঞ্জের সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন ও র‌্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ মণ্ডল।

নূর হোসেন

অভিযোগপত্রে বলা হয়, এলাকায় আধিপত্য নিয়ে বিরোধ থেকে কাউন্সিলর নজরুল ইসলামকে হত্যার এই পরিকল্পনা করেন আরেক কাউন্সিলর নূর হোসেন। আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে র‌্যাব সদস্যদের দিয়ে ওই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়।
মামলার আসামিদের মধ‌্যে র‌্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ১৭ জন এবং নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের তৎকালীন ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নূর হোসেনের পাঁচ সহযোগীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।

ঘটনার ১৭ মাস পর মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনকে ভারত থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। তিনিসহ মোট ২৩ আসামি এ মামলায় কারাগারে রয়েছেন; পলাতক ১২ জনের মধ‌্যে আটজনই র‌্যাব সদস্য।

নারায়ণগঞ্জ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ওয়াজেদ আলী খোকন জানান, আসামিদের মধ‌্যে ২১ জন ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষে মোট ১৬৪ জনের সাক্ষ‌্য শুনেছে আদালত; যাদের মধ‌্যে ৬০ জন প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন।

আসামিদের মধ‌্যে র‌্যাবের সাবেক কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার জামাতা। ২০১৪ সালের এপ্রিলে ওই হত্যাকাণ্ডের সময় তিনি র‌্যাব-১১ এর অধিনায়ক ছিলেন।

তারেক সাঈদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সুলতানুজ্জামান বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা প্রমাণের ‘সর্বোচ্চ চেষ্টা

মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ে কমিটি

Posted by B.K

নিউজ ডেক্স:প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রণয়ন, আবেদনকৃত ও তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের নিরীক্ষণ এবং তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিষ্পত্তিতে উপজেলা, জেলা/মহানগর যাচাই-বাছাই কমিটি করেছে সরকার।

স্বাধীনতার ৪৫ বছর পর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় গত ১২ জানুয়ারি এসব কমিটি গঠনের আদেশ জারি করে মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাইয়ে এর আগে গঠিত সব কমিটি বাতিল করেছে।

সংশ্লিষ্ট উপজেলার সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা হলে তিনি নিজে এই কমিটির সভাপতি হবেন। যেখানে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সদস্য নেই সেসব এলাকার কমিটির সভাপতি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় মনোনীত করবে।

কোনো উপজেলার সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা না হলে তার মনোনীত একজন মুক্তিযোদ্ধাকে কমিটির সদস্য করা হবে। তবে সংসদ সদস‌্য মনোনীত প্রতিনিধিকে কমিটির সভাপতি করা হলে ওই সংসদ সদস‌্য কমিটিতে সদস্য হিসেবে থাকবেন।

সংসদ সদস্য এবং তার মনোনীত প্রতিনিধির বাইরে উপজেলা পর্যায়ের কমিটিতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সদস্য, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল এবং জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বা তার মনোনীত একজন মুক্তিযোদ্ধা প্রতিনিধিকে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা মনোনীত একজন মুক্তিযোদ্ধা প্রতিনিধি কমিটি সদস্য হিসেবে থাকবেন।

এই কমিটির সদস‌্য সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)।

জেলা/মহানগর কমিটির সভাপতি নির্বাচনেও একই বিধান রাখা হয়েছে।

এই কমিটিতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সদস্য, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল, জেলা/মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বা তার মনোনীত জেলা/মহানগর এলাকার একজন মুক্তিযোদ্ধা প্রতিনিধিকে সদস্য করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট জেলা/মহানগর ইউনিট কমান্ডের ডেপুটি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার (জ্যেষ্ঠতম) কমিটিতে সদস্য এবং সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন।

আদেশে বলা হয়েছে, যাচাই-বাছাইয়ের আওতাধীন কোনো মুক্তিযোদ্ধা/প্রতিনিধি এসব কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন না। যাচাই-বাছাই কমিটির সভাপতি (সংসদ সদস্য ছাড়া) মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত হবেন।

“এই কমিটিকে ইতোপূর্বে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল কর্তৃক প্রেরিত মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য তথ্যাবলী মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই নির্দেশিকা ২০১৬ অনুরসণ করে যাচাই-বাছাই করতে হবে।”

কোনো কারণে কোনো কমিটির সভাপতি অনুপস্থিত থাকলে সমঝোতার মাধ্যমে কমিটির সদস্যদের মধ্য থেকে একজন সদস্য সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন।

কমিটির সদস্য সংখ্যার অধিকাংশের উপস্থিতিতে কমিটির কোরাম হয়েছে বিবেচনা করে কমিটি কার্যসম্পাদন করার নির্দেশনা দিয়ে আদেশে বলা হয়েছে, কোনো কারণ দর্শানো ছাড়াই কর্তৃপক্ষ যে কোনো কমিটির আংশিক বাতিল বা সংশোধন করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করে।

যাচাই-বাছাই কমিটিকে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল ঘোষিত তারিখ ও স্থানে (সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা/জেলা প্রশাসকের কার্যালয়) যাচাই-বাছাই করতে হবে।

কমিটিগুলো ‘মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই নির্দেশিকা- ২০১৬’ অনুযায়ী যাচাই-বাছাই সম্পন্ন করে সঙ্গে সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে প্রতিবেদন পাঠাবে।

সংশ্লিষ্ট উপজেলা নোটিস বোর্ডে একটি কপি টাঙিয়ে রাখতেও বলা হয়েছে।

লোহাগাড়ায় প্রাচীন শিব মন্দিরের জরাজীর্ণ অবস্থা, সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা।

এস এম আকাশ,লোহাগাড়াঃ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া উপজেলা যেখানে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান মুসলিম সবাই একসাথে বিভিন্ন ধর্মীয় অনু্ষ্ঠান উপভোগ করে। বিশ্বস্ত সুত্রে জানা যায়, বণিক পাড়া শিব মন্দিরটি অনেক প্রাচীন মন্দির যা ১৯২০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং মুক্তিযুদ্ধ চলাকালিন মন্দিরটির উপর পাক হানাদার বাহিনী অতর্কিত হামলা চালায় এবং ভক্তদের উপর পাশবিক নির্যাতন চালায় ফলে ভক্তদের মাঝে বিরুপ মনোভাব সৃষ্টি হওয়ায় মন্দিরের অবকাঠামো উন্নয়নের ব্যাপারে সঠিক উদ্যোগের অভাবে মন্দিরটি অদ্যাবধি জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। জানা যায় দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে মন্দিরে প্রতিদিন পুজা হয় এবং মন্দির কর্তৃপক্ষ  প্রতিবছর পৌষসংক্রান্তিতে হাজার হাজার ভক্তবৃন্দের মাঝে প্রসাদ বিতরণ করে। এলাকাবাসী মন্দিরটির উন্নয়নে সরকারের  আন্তরিক হস্তক্ষেপ কামনা করেন,এছাড়াও বিভিন্ন ধর্মীয় নেতা, দানশীল ব্যক্তিদের সহযোগিতা কামনা করেন। সুমন মজুমদার হিরো সিটিজি২৪বিডি.কম কে বলেন, কালের সাক্ষী  এই পুরাতন মন্দিরটি  সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা ও স্থানীয় দানশীল ব্যক্তিদের সহযোগিতা পেলে আবার হারানো ঐতিহ্য ফিরে পেত। সরকারের প্রতি অনুরোধ থাকবে যাতে সরোজমিন পরিদর্শনের মাধ্যমে এটার দেখভাল করা হয়।

শনিবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০১৭

আ'লীগ সরকারের তিন বছর পূর্তি উপলক্ষে বান্দরবান জেলা ছাত্রলীগের আনন্দ মিছিল

বি.কে বিচিত্র, নিজস্ব প্রতিবেদক, বান্দরবান:দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশরত্ন শেখ হাসিনার সফলতার তিন বছর পূর্তি উপলক্ষে বাংলাদেশে ছাত্রলীগ, বান্দরবান জেলা শাখা কর্তৃক আয়োজিত আনন্দ মিছিল বের হয়ে শহরের প্রধান স্থান প্রদক্ষিণ করে। শনিবার ৩টায় বান্দরবান জেলা  আ'লীগ কার্যালয় থেকে আনন্দ মিছিল বের করা হয়। বান্দরবান শহর প্রদক্ষিণ  করে পুনরায়  আ'লীগ কার্যালয়ে এসে শেষ হয়।এসময় উপস্থিত ছিলেন, বান্দরবান জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ  সম্পাদক জনি সুশিল, বান্দরবান সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের আহবায়ক নাজমুল হোসেন বাবলু, যুগ্ন আহবায়ক টিপু দাশ, শিবলু,   পৌর ছাত্রলীগ, ও বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা। এসময় বক্তারা সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নের দিক তুলে ধরে সরকারের সাফল্য কামনা করে।

জীবন যুদ্ধের গল্প-রোদ্দুর হতে পেরেছে শ্যামলকান্তি


জীবন মানে যুদ্ধ—এ কথার অর্থ শ্যামলকান্তির চেয়ে বেশি কেউ জানে না। টিকে থাকতে নামও বদলেছেন কয়েকবার। অবশেষে শ্যামলকান্তি বিশ্বাস বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক।





আমার নাম ছিল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। বাড়ি যশোর।

গ্রামের নাম জঙ্গলবাঁধাল। সদর উপজেলার বসুন্দিয়া ইউনিয়নে। বাবার নাম কৃষ্ণপদ দেবনাথ, মায়ের নাম কদম বৈরাগী। তাঁরা কেউ আর বেঁচে নেই। আমি তাঁদের একমাত্র সন্তান। মা ছিলেন বাবার দ্বিতীয় স্ত্রী। বাবার বয়স ৫০ যখন, পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে গেলেন। কঠিন হয়ে গেল আমাদের দিনগুলো। আয়ের কোনো উৎস ছিল না আমাদের। বাবা মারা যান ১৯৯২ সালে। আমার বয়স তখন সাড়ে তিন বছর মাত্র।

 

বাড়িহারা হলাম

গ্রামের এক মুদি দোকানদারের কাছে বেশ কিছু টাকা ঋণ ছিল বাবার। মায়ের সামর্থ্য ছিল না তা শোধ করার। মুদি দোকানি স্থানীয় মাতব্বরদের সঙ্গে ঘোঁট পাকিয়ে আমাদের বসতবাড়ি আর বাড়ির ধারের জমিটুকুর দখল নিয়ে নেয়। আমার মা ছিলেন বৈরাগী, মানে নিম্ন গোত্রের। আমার জেঠামশাই আর কাকা কেউ মাকে মেনে নেয়নি কখনোই। আমাকেও তাঁদের বংশের বলে স্বীকার করতে চাইতেন না। বাবার মৃত্যুর পর তাঁরা কেউ ফিরেও তাকায়নি। বাবার প্রথম পক্ষের সন্তানরাও তখন মোটামুটি প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু তারা অন্যত্র আলাদাভাবে বসবাস করত। যোগাযোগ রাখত না।

 

মা পড়লেন অথই জলে

আমার মায়ের পৈতৃক বাড়ি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার জলিরপাড় ইউনিয়নের বানিয়ারচর গ্রামের বৈরাগীপাড়ায়। কোনো মামা নেই আমার। মায়ের অন্য দুই বোনও আর্থিক কষ্টে ছিলেন। এমন পরিস্থিতিকে দুঃসহ বলা ভালো। মা পড়লেন অথই জলে। প্রতিবেশী আব্বাস মোল্লা ছিলেন বাবার ঘনিষ্ঠ। নিজের বাড়িতে আমাকে ও মাকে আশ্রয় দিলেন। একবেলা-দুবেলা খেয়ে কোনোমতে দিন চলে যাচ্ছিল।

অন্য উপায় না পেয়ে মা মসুর ডাল ভাঙানোর মিলে কাজ নিলেন। শ্রমিকের কাজ।

 

দৈনিক মজুরি ২৫ টাকা

সকাল থেকে সন্ধ্যা টানা কাজ করতে হতো মাকে। মাত্র ২৫ টাকা মজুরি পেতেন দিনে। এ দিয়ে আমরা খাব, না পাওনাদারের ঋণ শোধ করব? মায়ের দুশ্চিন্তা বাড়তেই থাকল। হাড়ভাঙা খাটুনির ফলে মায়ের শরীরেও নানা রোগ বাসা বাঁধল। একপর্যায়ে তিনি কাজ করার শক্তি হারিয়ে ফেলেন। আমাকে তখন চায়ের দোকান বা হোটেলের কাজে দেওয়ার কথা বললেন অনেকে। কিন্তু মা চাইতেন আমি লেখাপড়া শিখে ভালো কিছু করি।

 

মিশনারি স্কুলে চলে যেতে হলো

কোনোভাবেই চলছিল না আমাদের। একপর্যায়ে মা আমার ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে একটি খ্রিস্টান মিশনারি স্কুলে পাঠিয়ে দিলেন। সেটি ১৯৯৬ সাল। স্কুলটি খুলনায়। অথচ আমিই ছিলাম মায়ের অন্ধের যষ্ঠি। কিন্তু উপায় কী কাছ ছাড়া না করে? যা-ই হোক, আমার স্কুলটি ছিল খুলনার দৌলতপুর উপজেলার মহেশ্বর পাড়ায়। নাম ক্যালভেরি অ্যাপস্টোলিক চার্চ, স্কুল ও অরফানেজ। মা থাকতে শুরু করেন অভয়নগরের নওয়াপাড়া শিল্পশহরে, বড় মাসির সঙ্গে। বছরে তিন-চারবার মা এসে আমার সঙ্গে দেখা করে যেতেন। মিশনের পরিচালক ছিলেন ফাদার জন হিরা। তিনি আমাকে ‘অ্যারন’ বলে ডাকতেন। অন্য সহপাঠীরাও ডাকত অ্যারন। মিশনে থাকা-খাওয়া সব কিছুই ছিল ফ্রি। পড়াশোনাও হতো ভালো।

 

মা চলে গেলেন

রোগ ছিল শরীরে। মনে ছিল শোক। মা আর সইতে পারলেন না। ১৯৯৮ সালের অক্টোবরে না-ফেরার দেশে চলে গেলেন মা। মাকে নওয়াপাড়া মহাশ্মশানে সমাধিস্থ করা হয়েছিল। মাকে শেষবারের মতো দেখার জন্য মাসতুতো দাদারা আমাকে মিশন থেকে নিতে এসেছিলেন। কিন্তু মায়ের মৃত্যু আমি সহজে নিতে পারব না ভেবে মিশন কর্তৃপক্ষ দাদাদের সঙ্গে পরামর্শ করে খবরটি গোপন রাখে। দাদাদের সঙ্গে সেবার আমার যাওয়া হয়নি। জানতে পারি অনেক পরে।

 

আমার যাওয়ার জায়গা ছিল না

মিশন স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষা হতো নভেম্বরের মাঝামাঝিতে। অনাথ আশ্রমের ছেলেরা তখন আত্মীয় বাড়িতে যাওয়ার সুযোগ পেত। ফিরে আসত জানুয়ারির শুরুতে। কিন্তু এই দেড় মাসও মিশনেই থাকতাম। আমার খারাপ লাগত খুব। নিজেকে খুব অসহায় মনে হতো। একবার ১৯৯৯ সালে মিশন থেকে পালিয়েছিলাম। বড় মাসির বাড়িতে গিয়ে উঠেছিলাম। পরে আমাকে বুঝিয়েসুঝিয়ে তাঁরা আবার মিশনে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু মিশন কর্তৃপক্ষ আমাকে আর ভর্তি করাতে রাজি হয়নি।

 

নাম হলো শ্যামলকান্তি

মিশনে জায়গা না পেয়ে মাসির বাড়িতে থাকতে শুরু করি। কিন্তু সেখানে জীবন সহজ ছিল না। কিছুদিন পর আমি আবার আব্বাস মোল্লার বাড়িতে গিয়ে উঠি। মাঠে গরু-ছাগল চরানো, ঘাস কাটা ইত্যাদি কাজ ছিল আমার। তবে স্কুলে যেতে পারছিলাম। জঙ্গলবাঁধাল মাধ্যমিক বিদ্যালয়। সেখানে সহপাঠীরা আমাকে ‘হারুন’ নামে ডাকত। আমি ইসলাম শিক্ষার ক্লাস করতাম। ভালো ব্যাপার ছিল যে আমি প্রতি ক্লাসেই ফার্স্ট হতাম। তাই স্যারেরা আমাকে সাহায্য করতেন। স্কুলের একজন শিক্ষক সন্তোষ চক্রবর্তী, ২০০২ সালে আমাকে মণিরামপুর উপজেলার মশিয়াহাটী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে দেন। তখন আমি অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। ভর্তির সময় আমার মা-বাবার নাম লেখা হয় কালিদাস বিশ্বাস ও অমিতা বিশ্বাস। সন্তোষ স্যার তখনো অবিবাহিত ছিলেন। কালিদাস-অমিতা দম্পতি তাঁর বন্ধু ছিলেন। তাঁরা থাকতেন নওয়াপাড়া শিল্পশহরে। আমার নাম রাখা হয় শ্যামলকান্তি বিশ্বাস।

 

২০০৫ সালে এসএসসি দিলাম

স্কুলের হোস্টেলে থেকেই পড়ালেখা করতাম। খরচাপাতি কালিদাস বিশ্বাসই দিতেন। যেদিন স্কুল বন্ধ থাকত সেদিন মাছের ঘেরে কাজ করতাম। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ২০০৫ সালে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হই। ভর্তি হই নওয়াপাড়া ডিগ্রি কলেজে। তখন পালক বাবা কালিদাস বিশ্বাসের বাড়িতে থাকতাম। বাড়ির টুকটাক কাজ করতাম। সেখান থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ২০০৭ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করি। ব্যবহারিক পরীক্ষা শেষে কলেজের সহপাঠীরা প্রায় সবাই প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ ও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার জন্য ঢাকায় কোচিং করতে গেল। তখন কালিদাস বিশ্বাসের কাছে আবদার করি, বন্ধুদের সঙ্গে ইঞ্জিনিয়ারিং কোচিং করতে ঢাকা যেতে চাই। ’ তিনি বলেন, ‘তুই ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হবি। পড়ালেখার পাশাপাশি কাপড়ের দোকানে কাজ করবি। ’ কিন্তু আমার মন মানছিল না। আমি কলেজের কয়েকজন শিক্ষককে অনুরোধ করলাম ব্যাপারটি আমার পালক বাবাকে বুঝিয়ে বলতে। তিনি রাজি হচ্ছিলেন না কোনোভাবেই। একপর্যায়ে আমি আবার বাড়ি ছাড়া হলাম।

 

দেখা হয়েছিল আমিনুলের সঙ্গে

কালিদাস বিশ্বাসের হয়তো ইচ্ছা ছিল, আমাকে মোটামুটি লেখাপড়া করিয়ে তাঁর দোকানের বিশ্বস্ত কর্মচারী করার। যা-ই হোক, আমি তখন খুবই হতাশাগ্রস্ত। ভাবলাম ঢাকায় যাই। কোনো গার্মেন্টে কাজ নেব। পকেটে ছিল মাত্র ২৭০ টাকা। ঢাকায় রওনা দেওয়ার আগে সহপাঠী আমিনুলের সঙ্গে দেখা হলো। আমিনুলদের অবস্থাও তত ভালো ছিল না। কিন্তু সে আমাকে নিজের মেসে থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিল। জোগাড় করে দিল টিউশনিও। আমিনুলের জামা-কাপড় দুজনে মিলেই পরতাম। বইপত্র সবই ছিল আমিনুলের। কিছুদিন পর এইচএসসির ফল বেরোল। কিন্তু আমিনুল এক বিষয়ে অকৃতকার্য হলো। ফলে আমিনুল ফিরে গেল নিজের গ্রামের বাড়িতে।

 

এবার শাফায়াত সাহায্য করল

অনেক কষ্টে যশোর বোর্ড থেকে এইচএসসির প্রবেশপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ডের ডুপ্লিকেট বের করলাম। আমার পালক বাবা রাগে ওগুলো ছিঁড়ে ফেলেছিলেন। প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদনের সময় শেষ হয়ে গিয়েছিল। ভরসা ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এদিকে মেসের খরচ জোগানো আমার জন্য দুঃসাধ্য হয়ে উঠল। কলেজেরই আরেক সহপাঠী ছিল শাফায়াত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফরম কিনে দিয়েছিল শাফায়াত। বাড়ি চলে গেলেও আমিনুল আমার খোঁজখবর রাখত। সব সময় সাহস দিত আমিনুল আর শাফায়াত।

 

এগিয়ে এলেন শরিফুল হাসান ভাই

২০০৮-০৯ সেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিলাম। ‘ঘ’ ইউনিটে (বিভাগ পরিবর্তন) মেধা তালিকায় ২৬১তম, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বিজ্ঞান বিভাগ) ১১তম এবং ‘ক’ ইউনিটে প্রথম অপেক্ষমাণ তালিকায় ছিলাম। ‘ঘ’ ইউনিট থেকে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে ভর্তির সুযোগ পাই। কিন্তু ভর্তির টাকা? নওয়াপাড়া ডিগ্রি কলেজের তখনকার অধ্যক্ষ রেজাউল করিম মন্টু স্যারকে বিষয়টি জানাই। তিনি চার হাজার টাকা জোগাড় করে দেন। পাশাপাশি দৈনিক প্রথম আলোর অভয়নগর উপজেলা প্রতিনিধি মাসুদ আলমের মাধ্যমে প্রথম আলোর শরিফুল হাসান ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। হাসান ভাই ভর্তির টাকা দেন এবং আমার ছয় মাসের খাওয়া ও আনুষঙ্গিক খরচ দেন। হাসান ভাইয়ের সহপাঠী সুদীপ দাদার মাধ্যমে জগন্নাথ হলে উঠি।

 

পড়তে পড়তে কাজ

পড়তে পড়তেই ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ (এমআরডিআই) নামের এক প্রতিষ্ঠানে সহকারী মনিটরিং অফিসার হিসেবে চাকরি পাই। মোহাম্মদপুর এলাকায় দুটি টিউশনিও করতাম। ২০১০ সালের শুরুতে বিডিনিউজটোয়েন্টিফোরে শিক্ষানবিশ সহসম্পাদক পদে যোগ দিই। প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণেও কাজ করেছি কয়েক মাস। মাস্টার্সের প্রথম সেমিস্টার পর্যন্ত দৈনিক আট ঘণ্টা অফিস করেছি। পরে হলে ফিরে সরকারি চাকরির জন্য রাত জাগতাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই আমি লক্ষ্যস্থির করেছিলাম হয় বিসিএস কর্মকর্তা হব, নইলে কাজ নেব বাংলাদেশ ব্যাংকে। ইংরেজি আর গণিতে আমার ভালো দক্ষতা। অবশেষে ২০১৫ সালের ব্যাচে বাংলাদেশ ব্যাংকে সহকারী পরিচালক পদে যোগদান করি।

 

একটি বিশেষ ঘটনা

তখন ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ি। আমার স্কুল ইউনিফর্ম ছিল না। সহপাঠীদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ ছিল ফারুক আর কালাচাঁদ। ফারুক ক্লাস শেষে চায়ের দোকানে কাজ করত। আর কালাচাঁদ তাদের ছোট মুদি দোকানে বসত। আমিও কাজ করতাম একটা কাঠের দোকানে। একদিন আমাকে অবাক করে দিয়ে ফারুক আর কালাচাঁদ এক সেট স্কুল ড্রেস নিয়ে এলো। বলল, ‘নে, এটা পরে স্কুলে যাবি। কখনো স্কুল কামাই দিবি না। আমাদের অভাবের সংসার। পড়াশোনা আসলে হবে না। তুই পড়াশোনা করলে ভালো কিছু করবি। ’ ফারুক আমার চেয়েও ভালো ছাত্র ছিল। গণিত আর ইংরেজিতে ভালো ছিল, কিন্তু পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেনি। ওদের সংসার বড় ছিল। ওকে ভাইবোনদের টানতে হতো। আমার বিশ্বাস, উপযুক্ত পরিবেশ পেলে ফারুক ইঞ্জিনিয়ার হতে পারত।

 

কাউকে ভুলিনি

আমিনুল, শাফায়েত, ফারুক, সন্তোষ স্যার ও হাসান ভাই—কাউকে ভুলিনি। আমিনুল এখন সিঙ্গাপুরে। আমার খবর এখনো নেয়। জানতে চায়, টাকা-পয়সা লাগবে কি না, কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না। তবে ফারুক আর কালাচাঁদের খবর পাই না। প্রার্থনা করি, সৃষ্টিকর্তা তাঁদের সুখে রাখুন।

 

মাকে মনে পড়ে

আমার সব কিছুর পেছনে ছিলেন আমার মা। তিনি লেখাপড়া জানতেন না, কিন্তু চাইতেন আমি শিক্ষিত হই। খুব পরিশ্রমী ছিলেন মা। পরিশ্রম করার শিক্ষা আমি মায়ের কাছ থেকেই পেয়েছি। আমি আজ প্রতিষ্ঠিত। আমার কোনো অভাব নেই এখন। দুঃখ শুধু, মা নেই! সূত্র-প্রথম-আলো

শুক্রবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০১৭

মাস্টার দা সূর্য সেন - সংক্ষিপ্ত জীবনী

Posted B.K

নিউজ ডেক্স:জন্ম ও শৈশব,বিয়ে
সূর্য সেন ১৮৯৪ সালের ২২ মার্চ
চট্টগ্রামের রাউজান থানার
নোয়াপাড়ায় অর্থনৈতিক ভাবে অস্বচ্ছল
পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার
নাম রাজমনি সেন এবং মাতার নাম
শশী বালা সেন। রাজমনি সেনের দুই
ছেলে আর চার মেয়ে। সূর্য সেন তাঁদের
পরিবারের চতুর্থ সন্তান। দুই ছেলের নাম
সূর্য ও কমল। চার মেয়ের নাম বরদাসুন্দরী,
সাবিত্রী, ভানুমতী ও প্রমিলা। শৈশবে
পিতা মাতাকে হারানো সূর্য সেন
কাকা গৌরমনি সেনের কাছে মানুষ
হয়েছেন। [১] সূর্য সেন ছেলেবেলা থেকেই
খুব মনোযোগী ভাল ছাত্র ছিলেন এবং
ধর্মভাবাপন্ন গম্ভীর প্রকৃতির ছিলেন। [২]
শিক্ষা জীবন
তাঁর প্রথম স্কুল ছিল দয়াময়ী উচ্চ
প্রাথমিক বিদ্যালয়। পরে তিনি
নোয়াপাড়া উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ে ৮ম
শ্রেনী পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। এরপর
তিনি ন্যাশনাল হাই স্কুলে ভর্তি হন।
সূর্য সেন ১৯১২ সালে চট্টগ্রামের
নন্দনকাননে অবস্থিত হরিশদত্তের
ন্যাশনাল স্কুল থেকে প্রবেশিকা
(এন্ট্রান্স) পাশ করে চট্টগ্রাম কলেজে
এফ. এ.-তে ভর্তি হন। সে সময় আই.এ বা
বর্তমানের উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি)
পরীক্ষার পরিবর্তে ফার্স্ট আর্টস বা এফ.
এ. পরীক্ষার নিয়ম ছিল। চট্টগ্রাম কলেজ
থেকে এফ. এ. পরীক্ষায় সাফল্যের সাথে
পাশ করে তিনি একই কলেজে বিএ-তে
ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু তৃতীয় বর্ষের
কোন এক সাময়িক পরীক্ষায় ভুলক্রমে
টেবিলে পাঠ্যবই রাখার কারণে তিনি
চট্টগ্রাম কলেজ থেকে বিতাড়িত হন।
ফলে, তাঁকে বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজে
বিএ পড়তে যেতে হয়। ১৯১৮ সালে তিনি
বহররমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজ থেকে বিএ পাশ
করেন এবং চট্টগ্রামে ফিরে এসে ব্রাহ্ম
সমাজের প্রধান আচার্য্য হরিশ দত্তের
জাতীয় স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন।
অসহযোগ আন্দোলনের সময় বিদ্যালয়টি
বন্ধ হয়ে গেলে তিনি দেওয়ানবাজারে
বিশিষ্ট উকিল অন্নদা চৌধুরী
প্রতিষ্ঠিত অধুনালুপ্ত 'উমাতারা উচ্চ
ইংরেজি বিদ্যালয়ে' অঙ্কের শিক্ষক
হিসেবে যোগ দেন। এসময় বিপ্লবী দলের
সাথে তাঁর সম্পর্ক গভীরতর হয়ে ওঠে
এবং শিক্ষকতা করার কারণে তিনি
'মাস্টারদা' হিসেবে পরিচিত হন।[৩]
বিবাহ
বিপ্লবী ভাবধারায় দীক্ষিত সূর্য সেন
দেশের স্বাধীনতার জন্য আত্মত্যাগকে
একমাত্র তপস্যা হিসেবে নিয়েছিলেন।
তাই তিনি বিবাহ-বিরোধী ছিলেন।
কিন্তু বিএ পাশ করে চট্টগ্রামে আসার
পর থেকেই অভিভাবকগণ তাঁর বিবাহের
কথাবার্তা তোলেন। অবশেষে তাঁর
বড়ভাই শিক্ষক চন্দ্রনাথ সেন (সহোদর
নয়) ও অন্যান্য আত্মীয়দের বিশেষ
অনুরোধে ১৯১৯ সালে তিনি চট্টগ্রামের
বোয়ালখালীর কানুনগোপাড়ার
নগেন্দ্রনাথ দত্তের ষোল বছরের কন্যা
পুষ্পকুন্তলা দত্তকে বিয়ে করেন।
আত্মীয়-স্বজনের চাপে বিয়ে করলেও
মাস্টারদার মনে এ ধারণা বলবৎ ছিল যে,
বিবাহিত জীবন তাকে কর্তব্যভ্রষ্ট ও
আদর্শচ্যুত করবে। তার ফলে স্ত্রীর সঙ্গে
তিনি একদিনও কথা পর্যন্ত বলেন নি।
বিবাহের তৃতীয় দিনে হিন্দুদের মধ্যে
যে ফুলশয্যার প্রথা প্রচলিত আছে সেটিও
তিনি পালন করেননি। সেদিন তিনি
তাঁর বৌদিকে বলেন যে, তিনি স্বপ্নে
দেখেছেন স্ত্রীর সঙ্গে সহবাসে তাঁর
মৃত্যু অনিবার্য। তাই তিনি সেদিনই
গ্রামের বাড়ি ছেড়ে শহরে চলে আসেন
এবং তারপর স্ত্রীর সাথে আর কোনদিন
দেখা করেন নি।[৪]
১৯২৬ সালে সূর্য সেন পলাতক অবস্থায়
কোলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রীটের এক
মেসে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন।
সেখান থেকে তাঁকে বোম্বাইয়ের
( মুম্বাই ) রত্নগিরি জেলে পাঠানো হয়।
মাস্টারদা যখন রত্নগিরি জেলে আটক,
তখন তাঁর স্ত্রীর কঠিন টাইফয়েড রোগ
হয়েছিল। দেওয়ানবাজারের যে বাসা
থেকে মাস্টারদা পালিয়ে গিয়েছিলেন,
তাঁর স্ত্রী সেখানে তখন মৃত্যুশয্যায়
ছিলেন। বহু দরখাস্তের পর মাস্টারদাকে
যখন পুলিশ পাহারায় রত্নগিরি জেল
থেকে ছুটিতে চট্টগ্রাম আনা হয় মূমুর্ষু
স্ত্রীকে দেখার জন্য, তাঁর স্ত্রীর আয়ু
তখন সম্পূর্ণ নিঃশেষিত। সূর্য সেনের
স্ত্রী বিপ্লবী কাজ-কর্মে তাঁকে নেয়ার
জন্য মাঝে মাঝে বয়োকনিষ্ঠ
সহকর্মীদের কাছে অনু্যোগ করতেন।
স্বামীর কাজের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা
পুষ্প দত্ত এ জীবনে আর এ বিপ্লবী
নেতার দেহ-মনের সান্নিধ্যে যেতে
পারেন নি।[৫]
ভিত্তি প্রস্তর এর নিম্নাংশঃ
এটি ১৯৭৫ সনের ১৮ ই এপ্রিল
বিপ্লবতীর্থ চট্টগ্রাম স্মৃতি
সংস্থা ও সূর্য সেন স্মারক
প্রতিমূর্তি কমিটি কলকাতা
কর্তৃক স্থাপিত হয়। প্রস্তরটির
এক পাশে ওই সময়ের
আন্দোলনে নিহত সকল
বিপ্লবীদের নাম মার্বেল
পাথরে খোদাই করা আছে।
মুর্তিটি সবসময় দর্শনার্থীদের
জন্য উন্মুক্ত থাকে।
## সুর্য সেনের আবক্ষ মূর্তির
স্থির চিত্র।
(এই ছবিটি চট্টগ্রাম ( বাংলাদেশ ) এর
আন্দরকিল্লায় অবস্থিত জে,এম,সেন হলে
নির্মিত সুর্য সেনের আবক্ষ মূর্তির স্থির
চিত্র।)

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৪র্থ আদালতের কার্যালয়, চট্টগ্রাম, বিভাগীয় বিশেষ জজ।নিয়োগে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় অনিয়ম!

 অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৪র্থ আদালতের কার্যালয়, চট্টগ্রাম,   বিভাগীয় বিশেষ জজ, আদালত, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে সরকারি বিধি অ...