শুক্রবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০১৭

মাস্টার দা সূর্য সেন - সংক্ষিপ্ত জীবনী

Posted B.K

নিউজ ডেক্স:জন্ম ও শৈশব,বিয়ে
সূর্য সেন ১৮৯৪ সালের ২২ মার্চ
চট্টগ্রামের রাউজান থানার
নোয়াপাড়ায় অর্থনৈতিক ভাবে অস্বচ্ছল
পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার
নাম রাজমনি সেন এবং মাতার নাম
শশী বালা সেন। রাজমনি সেনের দুই
ছেলে আর চার মেয়ে। সূর্য সেন তাঁদের
পরিবারের চতুর্থ সন্তান। দুই ছেলের নাম
সূর্য ও কমল। চার মেয়ের নাম বরদাসুন্দরী,
সাবিত্রী, ভানুমতী ও প্রমিলা। শৈশবে
পিতা মাতাকে হারানো সূর্য সেন
কাকা গৌরমনি সেনের কাছে মানুষ
হয়েছেন। [১] সূর্য সেন ছেলেবেলা থেকেই
খুব মনোযোগী ভাল ছাত্র ছিলেন এবং
ধর্মভাবাপন্ন গম্ভীর প্রকৃতির ছিলেন। [২]
শিক্ষা জীবন
তাঁর প্রথম স্কুল ছিল দয়াময়ী উচ্চ
প্রাথমিক বিদ্যালয়। পরে তিনি
নোয়াপাড়া উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ে ৮ম
শ্রেনী পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। এরপর
তিনি ন্যাশনাল হাই স্কুলে ভর্তি হন।
সূর্য সেন ১৯১২ সালে চট্টগ্রামের
নন্দনকাননে অবস্থিত হরিশদত্তের
ন্যাশনাল স্কুল থেকে প্রবেশিকা
(এন্ট্রান্স) পাশ করে চট্টগ্রাম কলেজে
এফ. এ.-তে ভর্তি হন। সে সময় আই.এ বা
বর্তমানের উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি)
পরীক্ষার পরিবর্তে ফার্স্ট আর্টস বা এফ.
এ. পরীক্ষার নিয়ম ছিল। চট্টগ্রাম কলেজ
থেকে এফ. এ. পরীক্ষায় সাফল্যের সাথে
পাশ করে তিনি একই কলেজে বিএ-তে
ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু তৃতীয় বর্ষের
কোন এক সাময়িক পরীক্ষায় ভুলক্রমে
টেবিলে পাঠ্যবই রাখার কারণে তিনি
চট্টগ্রাম কলেজ থেকে বিতাড়িত হন।
ফলে, তাঁকে বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজে
বিএ পড়তে যেতে হয়। ১৯১৮ সালে তিনি
বহররমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজ থেকে বিএ পাশ
করেন এবং চট্টগ্রামে ফিরে এসে ব্রাহ্ম
সমাজের প্রধান আচার্য্য হরিশ দত্তের
জাতীয় স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন।
অসহযোগ আন্দোলনের সময় বিদ্যালয়টি
বন্ধ হয়ে গেলে তিনি দেওয়ানবাজারে
বিশিষ্ট উকিল অন্নদা চৌধুরী
প্রতিষ্ঠিত অধুনালুপ্ত 'উমাতারা উচ্চ
ইংরেজি বিদ্যালয়ে' অঙ্কের শিক্ষক
হিসেবে যোগ দেন। এসময় বিপ্লবী দলের
সাথে তাঁর সম্পর্ক গভীরতর হয়ে ওঠে
এবং শিক্ষকতা করার কারণে তিনি
'মাস্টারদা' হিসেবে পরিচিত হন।[৩]
বিবাহ
বিপ্লবী ভাবধারায় দীক্ষিত সূর্য সেন
দেশের স্বাধীনতার জন্য আত্মত্যাগকে
একমাত্র তপস্যা হিসেবে নিয়েছিলেন।
তাই তিনি বিবাহ-বিরোধী ছিলেন।
কিন্তু বিএ পাশ করে চট্টগ্রামে আসার
পর থেকেই অভিভাবকগণ তাঁর বিবাহের
কথাবার্তা তোলেন। অবশেষে তাঁর
বড়ভাই শিক্ষক চন্দ্রনাথ সেন (সহোদর
নয়) ও অন্যান্য আত্মীয়দের বিশেষ
অনুরোধে ১৯১৯ সালে তিনি চট্টগ্রামের
বোয়ালখালীর কানুনগোপাড়ার
নগেন্দ্রনাথ দত্তের ষোল বছরের কন্যা
পুষ্পকুন্তলা দত্তকে বিয়ে করেন।
আত্মীয়-স্বজনের চাপে বিয়ে করলেও
মাস্টারদার মনে এ ধারণা বলবৎ ছিল যে,
বিবাহিত জীবন তাকে কর্তব্যভ্রষ্ট ও
আদর্শচ্যুত করবে। তার ফলে স্ত্রীর সঙ্গে
তিনি একদিনও কথা পর্যন্ত বলেন নি।
বিবাহের তৃতীয় দিনে হিন্দুদের মধ্যে
যে ফুলশয্যার প্রথা প্রচলিত আছে সেটিও
তিনি পালন করেননি। সেদিন তিনি
তাঁর বৌদিকে বলেন যে, তিনি স্বপ্নে
দেখেছেন স্ত্রীর সঙ্গে সহবাসে তাঁর
মৃত্যু অনিবার্য। তাই তিনি সেদিনই
গ্রামের বাড়ি ছেড়ে শহরে চলে আসেন
এবং তারপর স্ত্রীর সাথে আর কোনদিন
দেখা করেন নি।[৪]
১৯২৬ সালে সূর্য সেন পলাতক অবস্থায়
কোলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রীটের এক
মেসে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন।
সেখান থেকে তাঁকে বোম্বাইয়ের
( মুম্বাই ) রত্নগিরি জেলে পাঠানো হয়।
মাস্টারদা যখন রত্নগিরি জেলে আটক,
তখন তাঁর স্ত্রীর কঠিন টাইফয়েড রোগ
হয়েছিল। দেওয়ানবাজারের যে বাসা
থেকে মাস্টারদা পালিয়ে গিয়েছিলেন,
তাঁর স্ত্রী সেখানে তখন মৃত্যুশয্যায়
ছিলেন। বহু দরখাস্তের পর মাস্টারদাকে
যখন পুলিশ পাহারায় রত্নগিরি জেল
থেকে ছুটিতে চট্টগ্রাম আনা হয় মূমুর্ষু
স্ত্রীকে দেখার জন্য, তাঁর স্ত্রীর আয়ু
তখন সম্পূর্ণ নিঃশেষিত। সূর্য সেনের
স্ত্রী বিপ্লবী কাজ-কর্মে তাঁকে নেয়ার
জন্য মাঝে মাঝে বয়োকনিষ্ঠ
সহকর্মীদের কাছে অনু্যোগ করতেন।
স্বামীর কাজের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা
পুষ্প দত্ত এ জীবনে আর এ বিপ্লবী
নেতার দেহ-মনের সান্নিধ্যে যেতে
পারেন নি।[৫]
ভিত্তি প্রস্তর এর নিম্নাংশঃ
এটি ১৯৭৫ সনের ১৮ ই এপ্রিল
বিপ্লবতীর্থ চট্টগ্রাম স্মৃতি
সংস্থা ও সূর্য সেন স্মারক
প্রতিমূর্তি কমিটি কলকাতা
কর্তৃক স্থাপিত হয়। প্রস্তরটির
এক পাশে ওই সময়ের
আন্দোলনে নিহত সকল
বিপ্লবীদের নাম মার্বেল
পাথরে খোদাই করা আছে।
মুর্তিটি সবসময় দর্শনার্থীদের
জন্য উন্মুক্ত থাকে।
## সুর্য সেনের আবক্ষ মূর্তির
স্থির চিত্র।
(এই ছবিটি চট্টগ্রাম ( বাংলাদেশ ) এর
আন্দরকিল্লায় অবস্থিত জে,এম,সেন হলে
নির্মিত সুর্য সেনের আবক্ষ মূর্তির স্থির
চিত্র।)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৪র্থ আদালতের কার্যালয়, চট্টগ্রাম, বিভাগীয় বিশেষ জজ।নিয়োগে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় অনিয়ম!

 অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৪র্থ আদালতের কার্যালয়, চট্টগ্রাম,   বিভাগীয় বিশেষ জজ, আদালত, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে সরকারি বিধি অ...