শনিবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০১৭

আ'লীগ সরকারের তিন বছর পূর্তি উপলক্ষে বান্দরবান জেলা ছাত্রলীগের আনন্দ মিছিল

বি.কে বিচিত্র, নিজস্ব প্রতিবেদক, বান্দরবান:দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশরত্ন শেখ হাসিনার সফলতার তিন বছর পূর্তি উপলক্ষে বাংলাদেশে ছাত্রলীগ, বান্দরবান জেলা শাখা কর্তৃক আয়োজিত আনন্দ মিছিল বের হয়ে শহরের প্রধান স্থান প্রদক্ষিণ করে। শনিবার ৩টায় বান্দরবান জেলা  আ'লীগ কার্যালয় থেকে আনন্দ মিছিল বের করা হয়। বান্দরবান শহর প্রদক্ষিণ  করে পুনরায়  আ'লীগ কার্যালয়ে এসে শেষ হয়।এসময় উপস্থিত ছিলেন, বান্দরবান জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ  সম্পাদক জনি সুশিল, বান্দরবান সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের আহবায়ক নাজমুল হোসেন বাবলু, যুগ্ন আহবায়ক টিপু দাশ, শিবলু,   পৌর ছাত্রলীগ, ও বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা। এসময় বক্তারা সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নের দিক তুলে ধরে সরকারের সাফল্য কামনা করে।

জীবন যুদ্ধের গল্প-রোদ্দুর হতে পেরেছে শ্যামলকান্তি


জীবন মানে যুদ্ধ—এ কথার অর্থ শ্যামলকান্তির চেয়ে বেশি কেউ জানে না। টিকে থাকতে নামও বদলেছেন কয়েকবার। অবশেষে শ্যামলকান্তি বিশ্বাস বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক।





আমার নাম ছিল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। বাড়ি যশোর।

গ্রামের নাম জঙ্গলবাঁধাল। সদর উপজেলার বসুন্দিয়া ইউনিয়নে। বাবার নাম কৃষ্ণপদ দেবনাথ, মায়ের নাম কদম বৈরাগী। তাঁরা কেউ আর বেঁচে নেই। আমি তাঁদের একমাত্র সন্তান। মা ছিলেন বাবার দ্বিতীয় স্ত্রী। বাবার বয়স ৫০ যখন, পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে গেলেন। কঠিন হয়ে গেল আমাদের দিনগুলো। আয়ের কোনো উৎস ছিল না আমাদের। বাবা মারা যান ১৯৯২ সালে। আমার বয়স তখন সাড়ে তিন বছর মাত্র।

 

বাড়িহারা হলাম

গ্রামের এক মুদি দোকানদারের কাছে বেশ কিছু টাকা ঋণ ছিল বাবার। মায়ের সামর্থ্য ছিল না তা শোধ করার। মুদি দোকানি স্থানীয় মাতব্বরদের সঙ্গে ঘোঁট পাকিয়ে আমাদের বসতবাড়ি আর বাড়ির ধারের জমিটুকুর দখল নিয়ে নেয়। আমার মা ছিলেন বৈরাগী, মানে নিম্ন গোত্রের। আমার জেঠামশাই আর কাকা কেউ মাকে মেনে নেয়নি কখনোই। আমাকেও তাঁদের বংশের বলে স্বীকার করতে চাইতেন না। বাবার মৃত্যুর পর তাঁরা কেউ ফিরেও তাকায়নি। বাবার প্রথম পক্ষের সন্তানরাও তখন মোটামুটি প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু তারা অন্যত্র আলাদাভাবে বসবাস করত। যোগাযোগ রাখত না।

 

মা পড়লেন অথই জলে

আমার মায়ের পৈতৃক বাড়ি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার জলিরপাড় ইউনিয়নের বানিয়ারচর গ্রামের বৈরাগীপাড়ায়। কোনো মামা নেই আমার। মায়ের অন্য দুই বোনও আর্থিক কষ্টে ছিলেন। এমন পরিস্থিতিকে দুঃসহ বলা ভালো। মা পড়লেন অথই জলে। প্রতিবেশী আব্বাস মোল্লা ছিলেন বাবার ঘনিষ্ঠ। নিজের বাড়িতে আমাকে ও মাকে আশ্রয় দিলেন। একবেলা-দুবেলা খেয়ে কোনোমতে দিন চলে যাচ্ছিল।

অন্য উপায় না পেয়ে মা মসুর ডাল ভাঙানোর মিলে কাজ নিলেন। শ্রমিকের কাজ।

 

দৈনিক মজুরি ২৫ টাকা

সকাল থেকে সন্ধ্যা টানা কাজ করতে হতো মাকে। মাত্র ২৫ টাকা মজুরি পেতেন দিনে। এ দিয়ে আমরা খাব, না পাওনাদারের ঋণ শোধ করব? মায়ের দুশ্চিন্তা বাড়তেই থাকল। হাড়ভাঙা খাটুনির ফলে মায়ের শরীরেও নানা রোগ বাসা বাঁধল। একপর্যায়ে তিনি কাজ করার শক্তি হারিয়ে ফেলেন। আমাকে তখন চায়ের দোকান বা হোটেলের কাজে দেওয়ার কথা বললেন অনেকে। কিন্তু মা চাইতেন আমি লেখাপড়া শিখে ভালো কিছু করি।

 

মিশনারি স্কুলে চলে যেতে হলো

কোনোভাবেই চলছিল না আমাদের। একপর্যায়ে মা আমার ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে একটি খ্রিস্টান মিশনারি স্কুলে পাঠিয়ে দিলেন। সেটি ১৯৯৬ সাল। স্কুলটি খুলনায়। অথচ আমিই ছিলাম মায়ের অন্ধের যষ্ঠি। কিন্তু উপায় কী কাছ ছাড়া না করে? যা-ই হোক, আমার স্কুলটি ছিল খুলনার দৌলতপুর উপজেলার মহেশ্বর পাড়ায়। নাম ক্যালভেরি অ্যাপস্টোলিক চার্চ, স্কুল ও অরফানেজ। মা থাকতে শুরু করেন অভয়নগরের নওয়াপাড়া শিল্পশহরে, বড় মাসির সঙ্গে। বছরে তিন-চারবার মা এসে আমার সঙ্গে দেখা করে যেতেন। মিশনের পরিচালক ছিলেন ফাদার জন হিরা। তিনি আমাকে ‘অ্যারন’ বলে ডাকতেন। অন্য সহপাঠীরাও ডাকত অ্যারন। মিশনে থাকা-খাওয়া সব কিছুই ছিল ফ্রি। পড়াশোনাও হতো ভালো।

 

মা চলে গেলেন

রোগ ছিল শরীরে। মনে ছিল শোক। মা আর সইতে পারলেন না। ১৯৯৮ সালের অক্টোবরে না-ফেরার দেশে চলে গেলেন মা। মাকে নওয়াপাড়া মহাশ্মশানে সমাধিস্থ করা হয়েছিল। মাকে শেষবারের মতো দেখার জন্য মাসতুতো দাদারা আমাকে মিশন থেকে নিতে এসেছিলেন। কিন্তু মায়ের মৃত্যু আমি সহজে নিতে পারব না ভেবে মিশন কর্তৃপক্ষ দাদাদের সঙ্গে পরামর্শ করে খবরটি গোপন রাখে। দাদাদের সঙ্গে সেবার আমার যাওয়া হয়নি। জানতে পারি অনেক পরে।

 

আমার যাওয়ার জায়গা ছিল না

মিশন স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষা হতো নভেম্বরের মাঝামাঝিতে। অনাথ আশ্রমের ছেলেরা তখন আত্মীয় বাড়িতে যাওয়ার সুযোগ পেত। ফিরে আসত জানুয়ারির শুরুতে। কিন্তু এই দেড় মাসও মিশনেই থাকতাম। আমার খারাপ লাগত খুব। নিজেকে খুব অসহায় মনে হতো। একবার ১৯৯৯ সালে মিশন থেকে পালিয়েছিলাম। বড় মাসির বাড়িতে গিয়ে উঠেছিলাম। পরে আমাকে বুঝিয়েসুঝিয়ে তাঁরা আবার মিশনে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু মিশন কর্তৃপক্ষ আমাকে আর ভর্তি করাতে রাজি হয়নি।

 

নাম হলো শ্যামলকান্তি

মিশনে জায়গা না পেয়ে মাসির বাড়িতে থাকতে শুরু করি। কিন্তু সেখানে জীবন সহজ ছিল না। কিছুদিন পর আমি আবার আব্বাস মোল্লার বাড়িতে গিয়ে উঠি। মাঠে গরু-ছাগল চরানো, ঘাস কাটা ইত্যাদি কাজ ছিল আমার। তবে স্কুলে যেতে পারছিলাম। জঙ্গলবাঁধাল মাধ্যমিক বিদ্যালয়। সেখানে সহপাঠীরা আমাকে ‘হারুন’ নামে ডাকত। আমি ইসলাম শিক্ষার ক্লাস করতাম। ভালো ব্যাপার ছিল যে আমি প্রতি ক্লাসেই ফার্স্ট হতাম। তাই স্যারেরা আমাকে সাহায্য করতেন। স্কুলের একজন শিক্ষক সন্তোষ চক্রবর্তী, ২০০২ সালে আমাকে মণিরামপুর উপজেলার মশিয়াহাটী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে দেন। তখন আমি অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। ভর্তির সময় আমার মা-বাবার নাম লেখা হয় কালিদাস বিশ্বাস ও অমিতা বিশ্বাস। সন্তোষ স্যার তখনো অবিবাহিত ছিলেন। কালিদাস-অমিতা দম্পতি তাঁর বন্ধু ছিলেন। তাঁরা থাকতেন নওয়াপাড়া শিল্পশহরে। আমার নাম রাখা হয় শ্যামলকান্তি বিশ্বাস।

 

২০০৫ সালে এসএসসি দিলাম

স্কুলের হোস্টেলে থেকেই পড়ালেখা করতাম। খরচাপাতি কালিদাস বিশ্বাসই দিতেন। যেদিন স্কুল বন্ধ থাকত সেদিন মাছের ঘেরে কাজ করতাম। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ২০০৫ সালে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হই। ভর্তি হই নওয়াপাড়া ডিগ্রি কলেজে। তখন পালক বাবা কালিদাস বিশ্বাসের বাড়িতে থাকতাম। বাড়ির টুকটাক কাজ করতাম। সেখান থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ২০০৭ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করি। ব্যবহারিক পরীক্ষা শেষে কলেজের সহপাঠীরা প্রায় সবাই প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ ও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার জন্য ঢাকায় কোচিং করতে গেল। তখন কালিদাস বিশ্বাসের কাছে আবদার করি, বন্ধুদের সঙ্গে ইঞ্জিনিয়ারিং কোচিং করতে ঢাকা যেতে চাই। ’ তিনি বলেন, ‘তুই ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হবি। পড়ালেখার পাশাপাশি কাপড়ের দোকানে কাজ করবি। ’ কিন্তু আমার মন মানছিল না। আমি কলেজের কয়েকজন শিক্ষককে অনুরোধ করলাম ব্যাপারটি আমার পালক বাবাকে বুঝিয়ে বলতে। তিনি রাজি হচ্ছিলেন না কোনোভাবেই। একপর্যায়ে আমি আবার বাড়ি ছাড়া হলাম।

 

দেখা হয়েছিল আমিনুলের সঙ্গে

কালিদাস বিশ্বাসের হয়তো ইচ্ছা ছিল, আমাকে মোটামুটি লেখাপড়া করিয়ে তাঁর দোকানের বিশ্বস্ত কর্মচারী করার। যা-ই হোক, আমি তখন খুবই হতাশাগ্রস্ত। ভাবলাম ঢাকায় যাই। কোনো গার্মেন্টে কাজ নেব। পকেটে ছিল মাত্র ২৭০ টাকা। ঢাকায় রওনা দেওয়ার আগে সহপাঠী আমিনুলের সঙ্গে দেখা হলো। আমিনুলদের অবস্থাও তত ভালো ছিল না। কিন্তু সে আমাকে নিজের মেসে থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিল। জোগাড় করে দিল টিউশনিও। আমিনুলের জামা-কাপড় দুজনে মিলেই পরতাম। বইপত্র সবই ছিল আমিনুলের। কিছুদিন পর এইচএসসির ফল বেরোল। কিন্তু আমিনুল এক বিষয়ে অকৃতকার্য হলো। ফলে আমিনুল ফিরে গেল নিজের গ্রামের বাড়িতে।

 

এবার শাফায়াত সাহায্য করল

অনেক কষ্টে যশোর বোর্ড থেকে এইচএসসির প্রবেশপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ডের ডুপ্লিকেট বের করলাম। আমার পালক বাবা রাগে ওগুলো ছিঁড়ে ফেলেছিলেন। প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদনের সময় শেষ হয়ে গিয়েছিল। ভরসা ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এদিকে মেসের খরচ জোগানো আমার জন্য দুঃসাধ্য হয়ে উঠল। কলেজেরই আরেক সহপাঠী ছিল শাফায়াত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফরম কিনে দিয়েছিল শাফায়াত। বাড়ি চলে গেলেও আমিনুল আমার খোঁজখবর রাখত। সব সময় সাহস দিত আমিনুল আর শাফায়াত।

 

এগিয়ে এলেন শরিফুল হাসান ভাই

২০০৮-০৯ সেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিলাম। ‘ঘ’ ইউনিটে (বিভাগ পরিবর্তন) মেধা তালিকায় ২৬১তম, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বিজ্ঞান বিভাগ) ১১তম এবং ‘ক’ ইউনিটে প্রথম অপেক্ষমাণ তালিকায় ছিলাম। ‘ঘ’ ইউনিট থেকে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে ভর্তির সুযোগ পাই। কিন্তু ভর্তির টাকা? নওয়াপাড়া ডিগ্রি কলেজের তখনকার অধ্যক্ষ রেজাউল করিম মন্টু স্যারকে বিষয়টি জানাই। তিনি চার হাজার টাকা জোগাড় করে দেন। পাশাপাশি দৈনিক প্রথম আলোর অভয়নগর উপজেলা প্রতিনিধি মাসুদ আলমের মাধ্যমে প্রথম আলোর শরিফুল হাসান ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। হাসান ভাই ভর্তির টাকা দেন এবং আমার ছয় মাসের খাওয়া ও আনুষঙ্গিক খরচ দেন। হাসান ভাইয়ের সহপাঠী সুদীপ দাদার মাধ্যমে জগন্নাথ হলে উঠি।

 

পড়তে পড়তে কাজ

পড়তে পড়তেই ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ (এমআরডিআই) নামের এক প্রতিষ্ঠানে সহকারী মনিটরিং অফিসার হিসেবে চাকরি পাই। মোহাম্মদপুর এলাকায় দুটি টিউশনিও করতাম। ২০১০ সালের শুরুতে বিডিনিউজটোয়েন্টিফোরে শিক্ষানবিশ সহসম্পাদক পদে যোগ দিই। প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণেও কাজ করেছি কয়েক মাস। মাস্টার্সের প্রথম সেমিস্টার পর্যন্ত দৈনিক আট ঘণ্টা অফিস করেছি। পরে হলে ফিরে সরকারি চাকরির জন্য রাত জাগতাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই আমি লক্ষ্যস্থির করেছিলাম হয় বিসিএস কর্মকর্তা হব, নইলে কাজ নেব বাংলাদেশ ব্যাংকে। ইংরেজি আর গণিতে আমার ভালো দক্ষতা। অবশেষে ২০১৫ সালের ব্যাচে বাংলাদেশ ব্যাংকে সহকারী পরিচালক পদে যোগদান করি।

 

একটি বিশেষ ঘটনা

তখন ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ি। আমার স্কুল ইউনিফর্ম ছিল না। সহপাঠীদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ ছিল ফারুক আর কালাচাঁদ। ফারুক ক্লাস শেষে চায়ের দোকানে কাজ করত। আর কালাচাঁদ তাদের ছোট মুদি দোকানে বসত। আমিও কাজ করতাম একটা কাঠের দোকানে। একদিন আমাকে অবাক করে দিয়ে ফারুক আর কালাচাঁদ এক সেট স্কুল ড্রেস নিয়ে এলো। বলল, ‘নে, এটা পরে স্কুলে যাবি। কখনো স্কুল কামাই দিবি না। আমাদের অভাবের সংসার। পড়াশোনা আসলে হবে না। তুই পড়াশোনা করলে ভালো কিছু করবি। ’ ফারুক আমার চেয়েও ভালো ছাত্র ছিল। গণিত আর ইংরেজিতে ভালো ছিল, কিন্তু পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেনি। ওদের সংসার বড় ছিল। ওকে ভাইবোনদের টানতে হতো। আমার বিশ্বাস, উপযুক্ত পরিবেশ পেলে ফারুক ইঞ্জিনিয়ার হতে পারত।

 

কাউকে ভুলিনি

আমিনুল, শাফায়েত, ফারুক, সন্তোষ স্যার ও হাসান ভাই—কাউকে ভুলিনি। আমিনুল এখন সিঙ্গাপুরে। আমার খবর এখনো নেয়। জানতে চায়, টাকা-পয়সা লাগবে কি না, কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না। তবে ফারুক আর কালাচাঁদের খবর পাই না। প্রার্থনা করি, সৃষ্টিকর্তা তাঁদের সুখে রাখুন।

 

মাকে মনে পড়ে

আমার সব কিছুর পেছনে ছিলেন আমার মা। তিনি লেখাপড়া জানতেন না, কিন্তু চাইতেন আমি শিক্ষিত হই। খুব পরিশ্রমী ছিলেন মা। পরিশ্রম করার শিক্ষা আমি মায়ের কাছ থেকেই পেয়েছি। আমি আজ প্রতিষ্ঠিত। আমার কোনো অভাব নেই এখন। দুঃখ শুধু, মা নেই! সূত্র-প্রথম-আলো

শুক্রবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০১৭

মাস্টার দা সূর্য সেন - সংক্ষিপ্ত জীবনী

Posted B.K

নিউজ ডেক্স:জন্ম ও শৈশব,বিয়ে
সূর্য সেন ১৮৯৪ সালের ২২ মার্চ
চট্টগ্রামের রাউজান থানার
নোয়াপাড়ায় অর্থনৈতিক ভাবে অস্বচ্ছল
পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার
নাম রাজমনি সেন এবং মাতার নাম
শশী বালা সেন। রাজমনি সেনের দুই
ছেলে আর চার মেয়ে। সূর্য সেন তাঁদের
পরিবারের চতুর্থ সন্তান। দুই ছেলের নাম
সূর্য ও কমল। চার মেয়ের নাম বরদাসুন্দরী,
সাবিত্রী, ভানুমতী ও প্রমিলা। শৈশবে
পিতা মাতাকে হারানো সূর্য সেন
কাকা গৌরমনি সেনের কাছে মানুষ
হয়েছেন। [১] সূর্য সেন ছেলেবেলা থেকেই
খুব মনোযোগী ভাল ছাত্র ছিলেন এবং
ধর্মভাবাপন্ন গম্ভীর প্রকৃতির ছিলেন। [২]
শিক্ষা জীবন
তাঁর প্রথম স্কুল ছিল দয়াময়ী উচ্চ
প্রাথমিক বিদ্যালয়। পরে তিনি
নোয়াপাড়া উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ে ৮ম
শ্রেনী পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। এরপর
তিনি ন্যাশনাল হাই স্কুলে ভর্তি হন।
সূর্য সেন ১৯১২ সালে চট্টগ্রামের
নন্দনকাননে অবস্থিত হরিশদত্তের
ন্যাশনাল স্কুল থেকে প্রবেশিকা
(এন্ট্রান্স) পাশ করে চট্টগ্রাম কলেজে
এফ. এ.-তে ভর্তি হন। সে সময় আই.এ বা
বর্তমানের উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি)
পরীক্ষার পরিবর্তে ফার্স্ট আর্টস বা এফ.
এ. পরীক্ষার নিয়ম ছিল। চট্টগ্রাম কলেজ
থেকে এফ. এ. পরীক্ষায় সাফল্যের সাথে
পাশ করে তিনি একই কলেজে বিএ-তে
ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু তৃতীয় বর্ষের
কোন এক সাময়িক পরীক্ষায় ভুলক্রমে
টেবিলে পাঠ্যবই রাখার কারণে তিনি
চট্টগ্রাম কলেজ থেকে বিতাড়িত হন।
ফলে, তাঁকে বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজে
বিএ পড়তে যেতে হয়। ১৯১৮ সালে তিনি
বহররমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজ থেকে বিএ পাশ
করেন এবং চট্টগ্রামে ফিরে এসে ব্রাহ্ম
সমাজের প্রধান আচার্য্য হরিশ দত্তের
জাতীয় স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন।
অসহযোগ আন্দোলনের সময় বিদ্যালয়টি
বন্ধ হয়ে গেলে তিনি দেওয়ানবাজারে
বিশিষ্ট উকিল অন্নদা চৌধুরী
প্রতিষ্ঠিত অধুনালুপ্ত 'উমাতারা উচ্চ
ইংরেজি বিদ্যালয়ে' অঙ্কের শিক্ষক
হিসেবে যোগ দেন। এসময় বিপ্লবী দলের
সাথে তাঁর সম্পর্ক গভীরতর হয়ে ওঠে
এবং শিক্ষকতা করার কারণে তিনি
'মাস্টারদা' হিসেবে পরিচিত হন।[৩]
বিবাহ
বিপ্লবী ভাবধারায় দীক্ষিত সূর্য সেন
দেশের স্বাধীনতার জন্য আত্মত্যাগকে
একমাত্র তপস্যা হিসেবে নিয়েছিলেন।
তাই তিনি বিবাহ-বিরোধী ছিলেন।
কিন্তু বিএ পাশ করে চট্টগ্রামে আসার
পর থেকেই অভিভাবকগণ তাঁর বিবাহের
কথাবার্তা তোলেন। অবশেষে তাঁর
বড়ভাই শিক্ষক চন্দ্রনাথ সেন (সহোদর
নয়) ও অন্যান্য আত্মীয়দের বিশেষ
অনুরোধে ১৯১৯ সালে তিনি চট্টগ্রামের
বোয়ালখালীর কানুনগোপাড়ার
নগেন্দ্রনাথ দত্তের ষোল বছরের কন্যা
পুষ্পকুন্তলা দত্তকে বিয়ে করেন।
আত্মীয়-স্বজনের চাপে বিয়ে করলেও
মাস্টারদার মনে এ ধারণা বলবৎ ছিল যে,
বিবাহিত জীবন তাকে কর্তব্যভ্রষ্ট ও
আদর্শচ্যুত করবে। তার ফলে স্ত্রীর সঙ্গে
তিনি একদিনও কথা পর্যন্ত বলেন নি।
বিবাহের তৃতীয় দিনে হিন্দুদের মধ্যে
যে ফুলশয্যার প্রথা প্রচলিত আছে সেটিও
তিনি পালন করেননি। সেদিন তিনি
তাঁর বৌদিকে বলেন যে, তিনি স্বপ্নে
দেখেছেন স্ত্রীর সঙ্গে সহবাসে তাঁর
মৃত্যু অনিবার্য। তাই তিনি সেদিনই
গ্রামের বাড়ি ছেড়ে শহরে চলে আসেন
এবং তারপর স্ত্রীর সাথে আর কোনদিন
দেখা করেন নি।[৪]
১৯২৬ সালে সূর্য সেন পলাতক অবস্থায়
কোলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রীটের এক
মেসে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন।
সেখান থেকে তাঁকে বোম্বাইয়ের
( মুম্বাই ) রত্নগিরি জেলে পাঠানো হয়।
মাস্টারদা যখন রত্নগিরি জেলে আটক,
তখন তাঁর স্ত্রীর কঠিন টাইফয়েড রোগ
হয়েছিল। দেওয়ানবাজারের যে বাসা
থেকে মাস্টারদা পালিয়ে গিয়েছিলেন,
তাঁর স্ত্রী সেখানে তখন মৃত্যুশয্যায়
ছিলেন। বহু দরখাস্তের পর মাস্টারদাকে
যখন পুলিশ পাহারায় রত্নগিরি জেল
থেকে ছুটিতে চট্টগ্রাম আনা হয় মূমুর্ষু
স্ত্রীকে দেখার জন্য, তাঁর স্ত্রীর আয়ু
তখন সম্পূর্ণ নিঃশেষিত। সূর্য সেনের
স্ত্রী বিপ্লবী কাজ-কর্মে তাঁকে নেয়ার
জন্য মাঝে মাঝে বয়োকনিষ্ঠ
সহকর্মীদের কাছে অনু্যোগ করতেন।
স্বামীর কাজের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা
পুষ্প দত্ত এ জীবনে আর এ বিপ্লবী
নেতার দেহ-মনের সান্নিধ্যে যেতে
পারেন নি।[৫]
ভিত্তি প্রস্তর এর নিম্নাংশঃ
এটি ১৯৭৫ সনের ১৮ ই এপ্রিল
বিপ্লবতীর্থ চট্টগ্রাম স্মৃতি
সংস্থা ও সূর্য সেন স্মারক
প্রতিমূর্তি কমিটি কলকাতা
কর্তৃক স্থাপিত হয়। প্রস্তরটির
এক পাশে ওই সময়ের
আন্দোলনে নিহত সকল
বিপ্লবীদের নাম মার্বেল
পাথরে খোদাই করা আছে।
মুর্তিটি সবসময় দর্শনার্থীদের
জন্য উন্মুক্ত থাকে।
## সুর্য সেনের আবক্ষ মূর্তির
স্থির চিত্র।
(এই ছবিটি চট্টগ্রাম ( বাংলাদেশ ) এর
আন্দরকিল্লায় অবস্থিত জে,এম,সেন হলে
নির্মিত সুর্য সেনের আবক্ষ মূর্তির স্থির
চিত্র।)

আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর কলাম, একটি বিয়ে ও রাজনীতিক প্রেক্ষিত





গণজাগরণ মঞ্চের নেতা ইমরান সরকার বিয়ে করেছেন। এরকম বিয়ে তো দেশে রোজই হয়। পাঠক বলতে পারেন, একজন রাজনীতিকের বিয়ে নিয়ে লেখালেখির কী আছে? ইমরান সরকার রাজনীতিক হলে কী হবে, বয়সে তরুণ। বিয়ে তো তাকে করতেই হবে। এই পাঠকদের বলি, রোজই তো তৃতীয় মতে সিরিয়াস বিষয় নিয়ে লিখি। আজ না হয় একটা লঘু বিষয় নিয়েই লিখলাম। পাঠকরাও একটু হালকা বোধ করবেন। বিয়ে তো সবই সমান; কিন্তু কোনো কোনো বিয়ের পেছনে একটা রাজনৈতিক প্রেক্ষিত থাকে। ইমরান সরকারের বিয়েতে সেই প্রেক্ষিতটার কথাই মনে পড়ল। তাই লোভ সামলাতে পারলাম না।

 

আরও একটা কারণ আছে এই বিয়ে সম্পর্কে লেখার। বহু আওয়ামী লীগ নেতার কাছে ইমরান সরকার এবং তার বর্তমান রাজনীতি অপছন্দের। এই ইমরান সরকার একেবারে আওয়ামী লীগ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ সাহেবের মেয়েকে বিয়ে করে ফেলেছেন। তাতে শিক্ষামন্ত্রীর ভবিষ্যৎ ভেবে অনেকে শংকিত। জামাইয়ের বদৌলতে তিনিও দলের হাইকমান্ডের কাছে অচ্ছুৎ না হয়ে পড়েন! এক বয়োকনিষ্ঠ আওয়ামী নেতা আমার কাছে এই শংকা প্রকাশ করতেই তাকে বলেছি- বৎস, তিষ্ট ক্ষণকাল! এই জামাইয়ের বদৌলতেই আমাদের প্রিয় শিক্ষামন্ত্রীর ভাগ্য আরও খুলে যেতে পারে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন অনেক পরিপক্ব এবং দূরদর্শী। কথায় আছে, ‘প্রাণে যদি বাঁচতে চান, সাপের মাথায় ব্যাঙ খেলান।’ এই গুণটি শেখ হাসিনা এখন আয়ত্ত করেছেন।

 

ইমরান সরকার এবং তার গণজাগরণ মঞ্চকে আমি খুব পছন্দ করি। গণজাগরণ মঞ্চ তার আগের অতিস্ফীত জনপ্রিয়তা হারিয়েছে বৈকি; কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতিতে তারা যে ঐতিহাসিক ভূমিকাটি পালন করেছে, সেটি সঠিকভাবে ধরে রাখতে পারলে এই রাজনৈতিক প্লাটফরমটির এখনও একটি ভবিষ্যৎ আছে। আমি ঢাকায় গেলে ইমরান সরকার আমার কাছে আসেন (এবার ডিসেম্বর মাসেও এসেছিলেন)। তার সঙ্গে আসেন আমার প্রিয় অর্থনীতিবিদ ড. আবুল বারাকাত। থ্রি মাস্কেটিয়ার্সের অন্যতম ড. জাফর ইকবালের সঙ্গেও শাহবাগের মঞ্চে দেখা হয়েছে। আমরা দেশের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা করি।

 

ইমরান সরকারকে বলেছি, দেশে বাম গণতান্ত্রিক রাজনীতির ধারা এখন স্তিমিত। জাগরণ মঞ্চের প্রধান কর্তব্য এই ধারাটিকে শক্তিশালী করার চেষ্টা চালানো। তরুণ প্রজন্মের বিপথগামী অংশকে হিংস্র মৌলবাদের মোহ থেকে দূরে সরিয়ে এনে এই ধারার সঙ্গে যুক্ত করার উদ্যোগ নিয়ে রাজনৈতিক আন্দোলনের পাশাপাশি একটা সুস্থ সেক্যুলার সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলা। যে কাজটি পঞ্চাশের দশকে শক্তিশালী বামপন্থী সংগঠনগুলো করেছিল।

 

এ ব্যাপারে গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন আওয়ামী লীগের সঙ্গে যেন সাংঘর্ষিক না হয়, বরং পরিপূরক হয়। এই মুহূর্তে দেশে শেখ হাসিনার বিকল্প কোনো নেতৃত্ব নেই। এ কথাটা ইমরান সরকারও স্বীকার করেন। দেশে অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক রাজনীতির নিভু নিভু বাতি আওয়ামী লীগ। এই মুহূর্তে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধাচরণ করার অর্থ হবে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের শত্রু রাজনৈতিক অপশক্তির বাহুতে শক্তি জোগান। যে কাজটি আওয়ামী লীগের বিরোধিতার নামে ড. কামাল হোসেন, ড. ইউনূস, ডা. বদরুদ্দোজারা করেছেন এবং রাজনৈতিক ফসিল হয়ে গেছেন।

 

মঞ্চ এখন ছোট প্ল্যাটফরম হলেও তাকে সাহসের সঙ্গে সতর্ক পদক্ষেপ নিতে হবে। শেখ হাসিনার বিরোধিতা নয়, আবার আওয়ামী লীগকে ঢালাও সমর্থন দানও নয়। আওয়ামী লীগে যাতে সুযোগসন্ধানী ডানপন্থীরা মাথাচাড়া দিয়ে না ওঠে, আওয়ামী লীগ আপস ও সুবিধাবাদী রাজনীতির পথে চলে না যায়, সেজন্য আওয়ামী লীগ ও তার সরকারের ওপর বাম গণতান্ত্রিক রাজনীতির চাপ অব্যাহত রাখতে হবে; অন্যদিকে হাসিনার নেতৃত্বের ভিত্তিটি যাতে দুর্বল না হয়, সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। এটি অত্যন্ত দুরূহ কাজ; কিন্তু মঞ্চ যদি এ কাজটি সাফল্যের সঙ্গে করতে পারে, তাহলে এখন তার অবস্থান যতই দুর্বল হোক, বাংলাদেশের রাজনীতিতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনানির্ভর শক্তিশালী বিকল্পধারাটি তৈরিতে তার সাফল্য লাভের সম্ভাবনা বারো আনা।

 

এখন বর্তমানের বাস্তবতায় এবং বিয়ের প্রসঙ্গে ফিরে আসি। আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট অনেকেই ভাবছেন, এই মুহূর্তে আওয়ামী লীগের শত্রু হিসেবে বিবেচিত ইমরান সরকারের সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর মেয়ের বিয়ে দলের হাইকমান্ড ভালো চোখে দেখবে না। এই বিয়েতে শিক্ষামন্ত্রী হয়তো মনে মনে বিব্রত হয়েছেন, যদিও প্রকাশ্যে মেয়ের ইচ্ছার বিরোধিতা করা তার পক্ষে সম্ভব হয়নি। আওয়ামী লীগ মহলের একশ্রেণীর নেতার এই ধারণাটি সঠিক নয় বলেই আমার বিশ্বাস, কেন সঠিক নয় সেই কথাটি বলার জন্যই এই বিয়ে সম্পর্কে আমার আজ কলম ধরা। কারণ, এই বিয়ে যত স্বাভাবিক ও সাধারণ বিয়ে হোক, এর একটি রাজনৈতিক প্রেক্ষিত তৈরি হয়ে গেছে।

 

পশ্চিমবঙ্গের প্রখ্যাত এবং প্রয়াত ঔপন্যাসিক মনোজ বসুর ‘শত্রুপক্ষের মেয়ে’ অথবা ব্রিটিশ উপন্যাস ‘আইভান হো’ যারা পড়েছেন, তাদের কাছে এই রাজনৈতিক প্রেক্ষিতের কথা আর বুঝিয়ে বলতে হবে না। আওয়ামী লীগের অনেকের কাছে এখন ইমরান সরকার হয়তো শত্রুপক্ষ। এই শত্রুপক্ষকে ঘরে স্থান দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ভালো কাজ করেননি বলেও অনেকে মিছামিছি চিন্তিত হতে পারেন। আমার এই ধরনের বিয়ের অভিজ্ঞতা থেকে বলি, শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ এই বিয়েতে সম্মত হয়ে অত্যন্ত ভালো কাজ করেছেন। নিজের দলের উপকার করেছেন। মন্ত্রিত্বের টোপে যে শত্রু বশ হতে চায়নি, এখন প্রেমের ফাঁদে পড়ে সেই শত্রু (আমি ইমরান সরকারকে আওয়ামী লীগের শত্রু মনে করি না) সহজেই বশ হতে পারে। অতীতের অনেক ঘটনা তারই সাক্ষ্য দেয়।

 

আমি দেশ-বিদেশের বড় বড় ঘটনা নয়, দেশেরই দুটি ছোট ঘটনা উদাহরণ হিসেবে টানব। রাজনৈতিক নেতা মাহমুদ আলীর কথা আমরা এখনও নিশ্চয়ই ভুলিনি। এককালে ছিলেন জাঁদরেল বামপন্থী, ভাষা আন্দোলনের অন্যতম নেতা, ইয়ুথ লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। ’৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে তিনি দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। পাকিস্তানে তার মৃত্যু হয়। এই মাহমুদ আলী প্রথম যৌবনে ছিলেন একজন দুর্দান্ত তরুণ রাজনৈতিক সংগঠক; কিন্তু চরিত্রে ও স্বভাবে ছিলেন ডানপন্থী। অবিভক্ত বাংলায় কমিউনিস্ট পার্টি তখন বুদ্ধিদীপ্ত তরুণ মুসলমানদের মধ্যে তাদের ক্যাডার সংগ্রহের চেষ্টা চালাচ্ছে। মাহমুদ আলীর দিকে সহজেই তাদের দৃষ্টি পড়ে।

 

হাজেরা বেগম তখন কলকাতায় মুষ্টিমেয় আলোকিত মুসলিম তরুণীদের একজন। তিনি বামঘেঁষা। তাকে মাহমুদ আলীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়া হল। মুগ্ধ অথবা বিদ্ধ হতে মাহমুদ আলীর বেশি দেরি হল না। প্রেম থেকে পরিণয়। মাহমুদ আলী জাঁদরেল বামনেতায় পরিণত হলেন। পাকিস্তান হওয়ার পর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে প্রগতিশীল যুব আন্দোলন গড়ে তোলায় তিনি ছিলেন অন্যতম সংগঠক। হয়েছিলেন গণতান্ত্রিক দলের নেতা এবং হক মন্ত্রিসভার সদস্য। যদিও ’৭১ সালে তার পদস্খলন হয়।

 

আরেকটি উদাহরণ আমার বন্ধু, পঞ্চাশের শ্রেষ্ঠ কবিদের একজন হাসান হাফিজুর রহমানের বিয়ে। হাসান ছিলেন পঞ্চাশের সাংস্কৃতিক বিপ্লবের একজন অগ্রনায়ক। গড়ে তুলেছিলেন এস্টাবলিশমেন্টবিরোধী শক্তিশালী সাহিত্য আন্দোলন। চিন্তা-চেতনায় ছিলেন চরম বামপন্থী। আওয়ামী লীগকে মনে করতেন পেটি বুর্জোয়া দল এবং এই দল থেকে দূরে অবস্থান করতেন। ষাটের দশকে তিনি প্রচণ্ডভাবে চীনপন্থী বাম বুদ্ধিজীবী হয়ে ওঠেন।

 

ঢাকায় তৎকালীন আর্ট কলেজের এক তরুণী শিল্পীর সঙ্গে ছিল তার প্রেম। হয়তো বিয়েও হতো। ঠিক এ সময় আওয়ামী লীগের প্রাদেশিক মন্ত্রিসভার সদস্য যশোরের মশিউর রহমানের সুন্দরী শ্যালিকার সঙ্গে তার বিয়ের কথা হয়। হাসান হাফিজুর রহমান আমাদের বিস্মিত করে এই বিয়েতে সম্মত হন। মশিউর রহমান তখন ছিলেন প্রাদেশিক আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী। ১৯৭১ সালে হানাদার বাহিনীর হাতে তিনি নির্মমভাবে নিহত হন।

 

এই বিয়ের পর হাসান ধীরে ধীরে বদলাতে থাকেন। আওয়ামী লীগের প্রতি তার বিরূপতা কমে যায়। ১৯৭২ সালে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক দেয়া চাকরি গ্রহণ করে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নে চলে যান। পরে তার অকাল মৃত্যু ঘটে। এই বিয়ে নিয়ে পাঠান আমলের একটি গল্প বলে আজকের আলোচনা শেষ করি। সুলতানা রাজিয়া ছিলেন পাঠান আমলে দিল্লির সম্রাজ্ঞী। সে যুগের ‘ইন্দিরা গান্ধী’ ছিলেন অবিবাহিত। দোর্দণ্ড প্রতাপে সাম্রাজ্য চালাতেন। তার এক প্রভাবশালী সেনাপতি বিদ্রোহী হয় এবং কৌশলে সম্রাজ্ঞীকে বন্দি করে ফেলে। মুক্তির উপায় না দেখে সুলতানা রাজিয়া কৌশল খাটান এবং বিদ্রোহী সেনাপতিকে বিয়ের প্রস্তাব দেন।

 

সেনাপতি সানন্দে রাজি। এই বিয়ের পর সেনাপতিই হয়ে ওঠেন সুলতানা রাজিয়ার সবচেয়ে বড় সমর্থক। দরবারে কূটকৌশলী আমির ওমরাহের অনেক চক্রান্ত থেকে তিনি রাজিয়াকে রক্ষা করেন। শেষ পর্যন্ত ইন্দিরা গান্ধীর মতোই সুলতানা রাজিয়া চক্রান্তের বলি হয়ে নিহত হন। তাকে রক্ষা করতে গিয়ে তার সঙ্গে আত্মবলিদান করেন তার স্বামী সেনাপতিও। দুই শত্রুপক্ষের পরম শত্রুতাকে বিয়ে কী করে পরম মিত্রতায় পরিণত করেছে, সে সম্পর্কে এরকম অসংখ্য কাহিনী আছে দেশ-বিদেশের ইতিহাসে। ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার টোরি সমর্থক থেকে লেবার পার্টির সমর্থক এবং শেষ পর্যন্ত লেবার গভর্নমেন্টের প্রধান হয়েছিলেন, তাও বিয়ের কারণে- অর্থাৎ স্ত্রী চেরি ব্লেয়ারের প্রভাবে।

 

আওয়ামী লীগের মন্ত্রীকন্যাকে বিয়ে করে ইমরান সরকার কতটা বদলাবেন বা বদলাবেন না তা আমি জানি না। তবে বদলালে বিস্মিত হব না। তবু এই বিয়ের সার্থক দিকটাই আমি দেখছি এবং নববিবাহিত দম্পতির শুভ কামনা করছি। এই বিয়ের একটা রাজনৈতিক প্রেক্ষিত আছে। তা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতির জন্য শুভ হবে বলেই আমার ধারণা। এই বিয়েতে আওয়ামী লীগের কারও চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই। বিয়েটি আওয়ামী লীগের শত্রু নয়, মিত্রের সংখ্যা বাড়াবে।
  সূত্র-যুগান্তর
 




বুধবার, ১১ জানুয়ারী, ২০১৭

বীর বাহাদুরের জন্মদিন উপলক্ষে বান্দরবান সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ'র দুস্থ শিশুদের খাবার বিতরণ

বি.কে বিচিত্র, নিজস্ব প্রতিবেদক, বান্দরবান:বান্দরবান সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের উদ্যোগে  বীর বাহাদুরের জন্মদিন  কেক কেটে জন্মদিন উদযাপন করা হয়। এ উপলক্ষে মঙ্গলবার দুপুর ১২টায়  এক আড়ম্বর অনুষ্ঠানে কলেজ হল রুমে দোয়া কামনা ও  দুস্থ শিশুদের মাঝে খাবার বিতরণ  করা হয়। এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক ছাত্র নেতা রাজু বড়ুয়া,  আরো উপস্থিত ছিলেন কলেজ ছাত্রলীগের আহবায়ক নাজমুল হোসেন বাবলু, যুগ্ন আহবায়ক টিপু দাশ,  সদস্য রাজু, সুরিত,নাজমুল, নারায়ণ, সিকিম,  সুজন, বঙ্গবন্ধু ছাত্রাবাসের সভাপতি রুবেল দাশ,  সাধারণ সম্পাদক শামীম মিয়া, ও কলেজ ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ। এসময় প্রধান অতিথি  বলেন, পার্বত্য জনপদের অবিসংবাদিত নেতা, অপ্রতিরোধ্য কন্ঠস্বর,  আপামর জনগণের প্রিয় নেতা,  পার্বত্য বীর, বীর বাহাদুরের আজ জন্মদিন,  যার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে দুর্বার গতিতে বান্দরবানের প্রত্যন্ত জনপদ, হাজার বছর বেঁচে থাকুক প্রিয় বীর,

মঙ্গলবার, ১০ জানুয়ারী, ২০১৭

বীরের জন্ম দিনে বীর বাহাদুরের সংক্ষিপ্ত জীবনি

Posted by B.K

              
                         

★এস.কে খগেশপ্রতি চন্দ্র খোকন(সাংবাদিক)- লামা★
         
             পার্বত্য জনপদের অপ্রতিরোধ্য কন্ঠস্বর, পার্বত্য বীর, আপামর জনসাধারণের প্রিয় নেতা, বর্ষীয়মান রাজনীতিবিদ,  বান্দরবানের রুপকার বীর বাহাদুর উশৈসিং এম পি' র শুভ জন্মদিন শুভ হোউক....!!!
          পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী আমাদের প্রিয়নেতা জনাব বীর বাহাদুর উশৈসিং এম,পি জন্মদিনে শুভেচ্ছাসিক্ত হলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে। 
দাপ্তরিক কাজ শেষে সভাকক্ষে জন্মদিনের আয়োজনে অংশ নিয়ে কেক কাটেন তিনি। এ সময় সংসদ সদস্য জনাব উষাতন তালুকদার, সচিব জনাব নববিক্রম  কিশোর ত্রিপুরাসহ মন্ত্রণালয়ের  কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

সংক্ষিপ্ত জীবনিঃ
★★★★★★
বাবু বীর বাহাদুর উশৈসিং , এম পি মহোদয়  ১৯৬০ সালের ১০ জানুয়ারী বান্দরবান পার্বত্য জেলা সদরের একটি সাধারণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম প্রয়াত লালমোহন বাহাদুর এবং মাতা মা চ য়ই, তিনিএকজন গৃহিনী।
বীর বাহাদুর ঊশৈসিং ১৯৬৫ সালে প্রাথমিক শিক্ষা জীবন শুরু করেন। ১৯৭৬ সালে বান্দরবান সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেন। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণের জন্য তিনি প্রথমে চট্টগ্রাম সরকারী কলেজে এবং পরে বান্দরবান সরকারী কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন।
ছাত্র জীবনেই তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েন। ছাত্র জীবনে তিনি বান্দরবান ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক ও বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৯২ সালে বান্দরবান জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পরবর্তীতে জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জেলা স্কাউটের কমিশনার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
বীর বাহাদুর ঊশৈসিং ২০০২ সালে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এবং জাতীয় সংসদের বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সংসদীয় দলের হুইপ নির্বাচিত হন। আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালনের সময়ে তিনি বৃহত্তর চট্টগ্রাম বিভাগে সংগঠনকে সুসংগঠিত করার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করেন। তিনি বান্দরবান প্রেস ক্লাব ও রেডক্রিসেন্ট ইউনিটের আজীবন সদস্য। তিনি ১৯৭৯ সালে বান্দরবান পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তির পূর্বে এ সংক্রান্ত সংলাপ কমিটির অন্যতম সদস্য এবং তৎকালীন সরকারের বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে
দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৮ সালে উপমন্ত্রীর পদমর্যাদায় প্রথম বারের মত এবং ২০০৮ সালে প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় দ্বিতীয় বারের মত পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, রাঙ্গামাটি-এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। এর ফলে তিনি সমগ্র পার্বত্য অঞ্চলের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, কৃষি তথা ভৌত অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনায় সুযোগ
পান।
এছাড়া বীর বাহাদুর ঊশেসিং নবম জাতীয় সংসদের সংসদ কমিটি এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি ঐ সংসদের একজন প্যানেল স্পীকার ছিলেন যার ফলে ২০১৩ সালের ২২ জুলাই তিনি খন্ডকালীন সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি ছাত্র জীবন থেকেই খেলাধূলা ও সংস্কৃতি চর্চায় গভীর মনোযোগী ছিলেন। তার স্বীকৃতি স্বরূপ ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং বাংলাদেশ ফুটবল রেফারী কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি দক্ষতার সাথে আঞ্চলিক ও জাতীয় পর্যায়ে ফুটবল টুর্নামেন্ট খেলা পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৯৭ সালে ফিফা বিশ্বকপ ফুটবল কোয়ালিফাই রাউন্ডে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে মালয়েশিয়া গমন করেন এবং বাংলাদেশ ফুটবল দলের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাছাড়া অষ্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত অলিম্পিক ২০০০-এ বাংলাদেশ দলের চীফ অব দ্য মিশন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ঐতিহাসিক পার্বত্য শান্তি চুক্তির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি
স্বরূপ ইউনেস্কো শান্তি পুরস্কার গ্রহণের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে বীর বাহাদুর ঊশৈসিং ফ্রান্স গমন করেন। বাংলাদেশ বিমানের লন্ডন-নিউইয়র্ক ফ্লাইট উদ্বোধনের জন্য এবং জাতিসংঘের সাধারণ সভায় প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে আমেরিকা এবং ২০০৬ সালে চীনা কমিউনিষ্ট পার্টির আমন্ত্রণে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে চীন গমন করেন। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় কর্মসূচীতে অংশগ্রহণের জন্য জাপান, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, মায়ানমার ও কম্বোডিয়া সফর করেন।
বৃক্ষরোপণে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি জাতীয়ভাবে পুরস্কার প্রাপ্ত একজন ব্যক্তিত্ব। একজন শিক্ষানুরাগী হিসেবেও তার খ্যাতি সমধিক। তিনি ২০১০ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য হিসেবে মনোনীত হন এবং বর্তমানে এ পদে আসীন আছেন।
বীর বাহাদুর ঊশৈসিং ১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথম বারের মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৯৬ সালে সপ্তম, ২০০১ সালে অষ্টম, ২০০৮ সাালে নবম এবং সর্বশেষ ২০১৪ সালে ০৫ জানুয়ারী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বান্দরবান সংসদীয় আসন (৩০০ নং আসন) থেকে টানা পঞ্চম বারের মত জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের অধিকার বীর বাহাদুর ঊশৈসিং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে গঠিত মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে ১২.০১.২০১৪ তারিখে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
বীর বাহাদুর ঊশৈসিং ১৯৯১ সালে মে হ্লা প্রু’র সাথে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন। তিনি দুই পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের গর্বিত জনক। তার বড় ছেলে উসিং হাই (রবিন) বার-এট-ল এ অধ্যায়নরত ও ছোট ছেলে থোয়াইং শৈ ওয়াং (রোমিও) এ লেভেলের ছাত্র এবং একমাত্র কন্যা ম্যা ম্যা খিং (ভ্যানাস) ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে অধ্যয়নরত।

লেখক-
          এস.কে খগেশপ্রতি চন্দ্র খোকন(সাংবাদিক),
                সাংগঠনিক সম্পাদক-
                      লামা প্রেসক্লাব,
                            বান্দরবান।

লোহাগাড়ায় যৌতুক মুক্ত বিয়ে করার ঘোষণা দিলেন আব্বাস উদ্দিন

Posted by B.K
লোহাগাড়া:সব ভাল কাজের শুরু গুলো একে একে বা বিন্দু বিন্দুতে এভাবেই শুরু হয়ে থাকে।
পুটিবিলা ইউনিয়ণ এর নুরুল আমিন ভাই এর পর এবার যৌতুক মুক্ত বিয়ে করার ঘোষণা  দিয়ে আনুষ্টানিক বিয়ে সম্পন্ন করলেন পুটিবিলা ইউনিয়নের আরও এক ভাই আব্বাস উদ্দিন।
লোহাগাড়া উপজেলা সামাজিক ব্যাধি প্রতিরোধ ফোরাম এর প্রতিষ্টাতা,রূপকার ও সভাপতি মিসেস রিজিয়া চৌধুরী'র পক্ষ থেকে আমরা ফোরামের সকল সদস্যগণ  আব্বাস উদ্দিন ভাই এর প্রতি অভিনন্দন ও শুভ কামনা জানাচ্ছি। সাথে আরো শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।

পুটিবিলা_যৌতুক_ও_মাদক_বিরোধী_সম্মিলিত_সচেতন_নাগরিক_পরিষদ কে।
আশা করি নুরুল আমিন ভাই ও আব্বাস উদ্দিন ভাই এর ভূমিকাটি লোহাগাড়ার শত যুবকের যৌতুক মুক্ত বিয়ে করার অনুপ্রেরনার উৎস হিসাবে কাজ করবে।
কেউ কেউ প্রশ্ন করতে পারেন,লোহাগাড়ায় কি এর আগে কোন যৌতুক মুক্ত বিয়ে হয়নি?
তার উত্তর হয়েছে।তবে আমাদের উদ্দেশ্য লোহাগাড়ায় শতভাগ যৌতুক মুক্ত করা।
সৌজন্যেঃ- লোহাগাড়া উপজেলা সামাজিক ব্যাধি প্রতিরোধ ফোরাম।
সূত্র-মো: ওমর ফারুক এর ফেসবুক ওয়াল।

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৪র্থ আদালতের কার্যালয়, চট্টগ্রাম, বিভাগীয় বিশেষ জজ।নিয়োগে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় অনিয়ম!

 অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৪র্থ আদালতের কার্যালয়, চট্টগ্রাম,   বিভাগীয় বিশেষ জজ, আদালত, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে সরকারি বিধি অ...