শুক্রবার, ২৮ জুলাই, ২০১৭

কোটাধারী VS কোটা বিরোধী : মতামত


কোটাধারী  VS কোটা বিরোধী!!

প্রসঙ্গঃ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বিরোধী কটূক্তি! ও
প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা।

বি.কে বিচিত্র।
আপনাদের জেনে রাখা দরকার, মুক্তিযোদ্ধা কোটাধারীদের চেহারা দেখে চাকরি দেয় না সরকার তাদেরও পরীক্ষায় উত্তীর্ণ  হতে হয়। শুধু ভাইভায় গেলে কোটা বিবেচনা করা হয়। এর আগ পর্যন্ত সাধারণ প্রার্থীর মতো বিসিএসসহ অন্যান্য প্রতিযোগিতামূলক  পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয়। তাহলে কোটা নিয়ে আপনাদের মাথা ব্যথা কেন?  অশিক্ষিতরা এটা নিয়ে মাথা ঘামায় না। যতসব শিক্ষিত বুদ্ধিজীবীদের মাথা ব্যথা।
কোটাধারী প্রার্থীদের  শুন্য পদ সাপেক্ষে মেধার ভিত্তিতে  নিয়োগ দিচ্ছে
সরকার। তখন তো আপনারা বলেন না আমরা শুন্য কোটায় চাকরি নেব না।

চাকরিতে কোটা প্রথার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী একটি মহল আন্দোলন শুরু করে, অপরদিকে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী আতেল যারা নিজেদেরকে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের মানুষ বলে দাবি করে। তাদের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণে বিরত ছিল। মাত্র কয়েকজন আমলা মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছিলেন তাদের মধ্যে দু’একজন ওঠে পড়ে লেগেছেন চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটার বিরুদ্ধে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, সাংবাদিক, সাবেক সচিব টেলিভিশনের পর্দায় ঝড় তুলেছেন কোটা প্রথার বিরুদ্ধে।  ১৮ জুলাই ২০১৩ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কোটা প্রথার পক্ষে জোরালো অবস্থান গ্রহণ করায় ঐ আতেল গোষ্ঠী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ। ঐ গোষ্ঠী প্রতিদিন বেসরকারি টেলিভিশনে মধ্যরাতে টকশোতে অবিরাম বক্তৃতা দিয়ে চলেছে কোটা প্রথার বিরুদ্ধে। শিক্ষিত অকৃতজ্ঞ সুবিধাবাদি শ্রেণি একবার ভেবে দেখেননি (তারা আবার মুক্তিযুদ্ধের সুবিধা গ্রহণ করেছেন দুহাতে সব সিঁড়ি ভেঙেছেন কেউ কেউ জীবনের সর্বশেষ তলায় ওঠেছেন) মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন না হলে তাদের কী অবস্থা হতো?

 শিক্ষিত ও অকৃতজ্ঞ মানুষ সভ্য দেশে পাওয়া যাবে কি না সন্দেহ। স্বাধীনতা অর্জনের ৪৬ বছর পার হতে চললো বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধারা না খেয়ে দেয়ে দিনাতিপাত করে সে দিকে কারো নজর নেই কিন্তু মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের চাকরির কোটা কেড়ে নিতে ওঠে পড়ে লেগেছেন। এই বুদ্ধিজীবী মহল হায় সেলুকাস!! অথচ যথানিয়মে মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের পরীক্ষা দিয়ে নিজ নিজ যোগ্যতা অর্জন করতে হয়। মুক্তিযোদ্ধা সন্তান বলে বিনা পরীক্ষায় ও মেধা যাচাই না করে কাউকেই নিয়োগ দেয়া হয়নি।

মুক্তিযোদ্ধা সন্তানের কোটা পূরণ না হওয়ায় অন্যদেরকে কোটার শূন্য পদে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। এক হাজার দুইশত পঁচিশ জনকে মুক্তিযোদ্ধার কোটার বিপরীতে নিয়োগ দেয়া হয়েছে তারপরও এই মহলের আপত্তি কেন তা সহজেই বোধগম্য। মূল কথা হল মেধা নয়, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা বিরোধী। আওয়ামী লীগ সরকারের উচিৎ হবে সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কোটা আইনি বৈধতা প্রদান করা।

 মুক্তিযোদ্ধারাইতো অসাংবিধানিক! তাদের কোটা অসাংবিধানিক হবে না তো কী হবে? গত ১০ জুলাই ২০১৬  টিভির পর্দায় ও পত্র পত্রিকায় মুক্তিযোদ্ধা সন্তানের সরকারি চাকরির ৩০% কোটা সম্পর্কে আলোচনার ঝড় তুলেছিল  দেশের বিজ্ঞ প্রজ্ঞাবান ব্যক্তিরা!! মুক্তিযুদ্ধের ৪৬ বছর পর সম্মানিত অধ্যাপক মহাশিক্ষিত পণ্ডিত ডক্টরদের বোধোদয় হয়েছে। ১৯৭১ সালে যারা সুমহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে নিজেদেরকে খুব সতর্কভাবে যুদ্ধ থেকে অনেক দূরে অবস্থান করেছিলেন এদের মধ্যে সিংহভাগ পাকিস্তানি নাগরিকের পরিচয় দিয়ে স্কুল/কলেজে বই খাতা নিয়ে ক্লাসে যোগদান করেছিলেন মুক্তিযুদ্ধে যোগদান না করে।

আবার কেউ নিরাপদ দূরে কোথাও অবস্থান করেছিলেন কখন মুক্তিযুদ্ধের পরিসমাপ্তি হবে এবং স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহণ করবে আর ঐ সময়ে এদেশের সাধারণ গরিব মানুষের সন্তান অশিক্ষিত ও অল্পশিক্ষিত প্রায় ৯০% (কৃষক, শ্রমিক, দিন মজুর) যুদ্ধের মাঠে দেশমাতৃকার বেদীমূলে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে অসম যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিল মুক্তিযোদ্ধারা। মুক্তিযোদ্ধাদেরকে পাকিস্তানিরা বলেছিল এরা ভারতের অনুচর/ গুপ্তচর/ সন্ত্রাসী এবং এ ধরনের কার্যক্রম পাকিস্তানি সংবিধান পরিপন্থী। আজকে যারা মুক্তিযোদ্ধার চাকরির কোটার বিরোধিতা করছেন তাদের সঙ্গে পাকিস্তানিদের সামান্যতম পার্থক্য নেই।

 হায় স্বাধীন মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ! এই দেশের জন্য ২ লাখ মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধ করেছিল, ৩০ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছিল, ২ লাখ ৬৯ হাজার মা বোন ইজ্জত দিয়েছিল, অনেকেই পঙ্গুত্ব বরণ করেছিল, প্রায় এক কোটি মানুষ প্রতিবেশী দেশে আশ্রয় নিয়েছিল।

১৯৭১ সালে সু-মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণকারী প্রায় ৯০% মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন গরিব সাধারণ মানুষের সন্তান। শিক্ষিত সচ্ছল পরিবারের সন্তান ও সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রায় ৯৫% খুব সতর্কভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণে বিরত ছিলেন। অপরদিকে সচ্ছল ও শিক্ষিতদের ১০% মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন তারা যে কোনভাবে নিজেদের

বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই, ২০১৭

শিশুর মানসিক বিকাশ ও পারিপার্শ্বিক পরিবেশ


শিশুর মানসিক বিকাশ ও পারিপার্শ্বিক পরিবেশ।


বি.কে  বিচিত্র।
অমিত সম্ভাবনার আলো নিয়ে পৃথিবীতে আসে একটি শিশু। এ সম্ভাবনার বিকাশ কতটুকু ঘটবে তা নির্ভর করে তাকে কীভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে। শিশুর পরিবার, পিতা-মাতা এবং পারিপার্শ্বিক আবহের ওপরেই নির্ভর করে তার বিকাশ। শারীরিক, মানসিক, আত্মিক, নৈতিক এবং মননে সমৃদ্ধ নাগরিকই আমাদের প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম।
শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ একে অপরের পরিপূরক হলেও আমরা এতদিন শিশুর শারীরিক বিকাশকেই বেশি গুরুত্ব দিয়ে আসছি। শারীরিক ও মানসিক বিকাশ দুটি ভিন্ন প্রক্রিয়া। শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ছাড়া শিশু তথা মানুষের পরিপূর্ণ বিকাশ সম্ভব নয়। সমপ্র্রতি বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, শরীরের যে অঙ্গ মানসিক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করে, সেই অঙ্গ অর্থাত্ মস্তিষ্কের বৃদ্ধি ও বিকাশ সবচেয়ে দ্রুত হয় মাতৃগর্ভে, যা প্রায় শতকরা ৮০ ভাগ। এ দেশে পাঁচ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশুদের ১৮.৩৫ শতাংশ মানসিক রোগে আক্রান্ত।
জন্মলগ্নেই শিশুর মস্তিষ্কে কোটি কোটি কোষ বিদ্যমান থাকে। শিশুর পাঁচ বছর বয়সের মধ্যে মস্তিষ্কের ৮০-৯০ শতাংশ কোষের সংযোগ ঘটে। তবে এর বেশিরভাগ সংযোগই ঘটে প্রথম তিন বছর বয়সের মধ্যে। শিশুর সঙ্গে ভাববিনিময় ও পারস্পরিক ক্রিয়াদি যত বেশি হয়, শিশুর শিখন ও মস্তিষ্কের বিকাশ তত দ্রুত হয়। এর জন্য শিশুর সুস্থ ও সঠিক মানসিক বিকাশের সঙ্গে শিশুর পারিপার্শ্বিক আবহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিশুর পারিবারিক আবহ, সামাজিক আবহ, সর্বোপরি পরিবেশগত আবহ অত্যন্ত সুনির্দিষ্ট প্রভাব রাখে শিশুর মানসিক বিকাশের পর্যায়ে। জন্মের পর থেকেই শিশু শিখতে শুরু করে। প্রতিটি মুহূর্ত তার শেখার সময়, প্রতিটি ক্ষেত্রই তার পাঠশালা। তাই, এ সময় শিশুর যত্নে পূর্ণ মনোযোগ দেয়া দরকার। শিশুকে প্রতি মুহূর্তে দিতে হবে মধুর অভিজ্ঞতা, সুন্দর সাজানো সময়। ছোট শিশুদের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও কঠিন কাজ হচ্ছে কথা বলতে শেখা ও ভাষা বোঝা। শিশুকে গান শুনিয়ে, কথা বলে, ছড়া শুনিয়ে যা বলা হয়, তার মাধ্যমে শিশু সবচেয়ে ভালো শেখে। মনে রাখা দরকার, কথা বলতে পারার অনেক আগেই শিশু ভাষা বোঝার ক্ষমতা অর্জন করে। তাই শিশুকে অনবরত ধ্বনি, শব্দ, কথা, গান, ছবি দেখিয়ে ও অঙ্গভঙ্গি দিয়ে ভাবিয়ে রাখুন। ফলে শিশু শুনে, অনুকরণ করে এবং ধীরে ধীরে তার নিজস্ব ধ্বনিগুলোকে বোঝার মতো শব্দে পরিণত করে কথা বলতে শিখবে।
শিশুকে প্রচুর খেলাধুলার সুযোগ দিতে হবে। খেলার মাধ্যমে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বাড়ে। শিশুদের আচার-আচরণ ও ব্যক্তিত্ব বিকাশে বড়দের প্রভাব অত্যন্ত বেশি। বড়রা যদি শিশুদের প্রতি দয়া, সুবিবেচনা ও ভাব দেখায় তবে শিশুরাও এসব দৃষ্টান্ত অনুসরণ করবে। এতে তার মানসিকতা ইতিবাচক দিকে প্রবাহিত হতে থাকবে। তবে এর বিপরীত আচরণের ক্ষেত্রে শিশুরা ক্রোধ, অন্যের কথা না মানা, সহিংস আচরণ রপ্ত করতে থাকবে। শিশুর আবেগ অনুভূতি বা আচরণ অনেক সময় বড়দের কাছে অযৌক্তিক বা বাড়াবাড়ি মনে হতে পারে, কিন্তু শিশুর জন্য এটা স্বাভাবিক ও বাস্তব। তাই এ ব্যাপারে পিতামাতা ও বড়দের যথেষ্ট সহানুভূতিশীল হতে হবে।
শিশু নতুন কিছু শিখলে, তা যতই সামান্য হোক, তার সামনে সম্মতি, উত্সাহ ও আনন্দ প্রকাশ করা উচিত। সুস্বাস্থ্য, সুশিক্ষা, নিরাপত্তা, সুরক্ষা ও ভালোবাসার দাবি পূরণ করে প্রতিটি শিশুকে শারীরিক ও মানসিকভাবে বিকশিত করে তোলা সম্ভব। প্রত্যেক পিতামাতাই তার শিশুকে হাসি-খুশি, স্বাস্থ্যবান, বুদ্ধিদীপ্ত ও পূর্ণ বিকাশমান দেখতে চায়। আমরা যদি প্রতিটি শিশুকে একইরূপে দেখার চেষ্টা করি এবং সেভাবে গড়ে তুলতে আন্তরিক হই তবেই ভবিষ্যতে একটি সুন্দর সমৃদ্ধ রাষ্ট্র ও জাতি পাব।
 লেখক : বি.কে  বিচিত্র,  বিএসএস (অনার্স),  এমএসএস,  রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, জাবি।
bichitronu@gmail.com

শুক্রবার, ১৪ জুলাই, ২০১৭

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বেওয়ারিশ পঙ্গু রোগীদের মানবিক জীবন পর্ব -১


চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বেওয়ারিশ পঙ্গু রোগীদের মানবিক জীবন পর্ব -১
================================
আলাউদ্দিন ,লোহাগাড়া :

ভাবছিলাম অনেক দিন ধরে লেখব কিন্তু মা'র অপারেশনের পর থেকে কিছু   পারিবারিক টেনশন থাকায়  লেখা হয়নি । রমজানে শুরুর এক সাপ্তাহের মাঝামাঝি মা অসাবধানবসত বাড়িতে  পড়ে পায়ের  হাঁড়  ভেঙ্গে ফেলে। ।

স্থানীয় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিত্‍সা দিয়ে মা কে নিয়ে চলে গেলাম চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে । জীবনে প্রথম বার কোন রোগীকে নিয়ে  চমেকে । ২৬ নং মহিলা ওয়ার্ডে মাকে ভর্তি দিল । সিড়ি দিয়ে উঠার সময় ২৬ নং ওয়ার্ডের নিচ তালায় বারান্দায়  কয়েজন পঙ্গু রোগী দেখতে পায় । তাদের পাশে কেউ নেই । একা বসে যেন তারা কিছু ভাবতেছে । জরুরী কাজে প্রায় সময় নিচে উপরে আসা যাওয়া সময় দেখতাম তাদের । তাদের দেখে খুব চিন্তা লাগত। ভাবলাম তাদের নিয়ে একটা ফিচার লেখা যেতে পারে ।

পরদিন সকালে ফেসবুক বন্ধু আরিফুল ইসলাম চৌধুরীকে সাথে নিয়ে কথা বলতে চেষ্টা করলাম তাদের সাথে ।কথা হল এক বৃদ্ধার সাথে বয়স প্রায় ৬০ এর কাছাকাছি মুখে সাদা দাড়ি আছে ।

 নামটা ঠিক মনে নাই । বাড়ি নাকি হাটাজারিতে । জানতে চায়লাম দূর্ঘটনা কিভাবে হল ।বৃদ্ধটি জানান ৫/৬ মাসের বেশী আগে হাটাজারিতে রাস্তা পারাপারের সময় বাস সাথে দূর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন । এরপর কে বা কাহারা তাকে হাসপাতলে নিয়ে এসে ভর্তি করে দিয়ে চলে যায় । দুর্ঘটনায় তার একটি পায়ের হাড় ভেঙ্গে যায় । পুরো পা'টি সাদা ভেন্ডিজে ঢাকা । কাছে গিয়ে জানতে চায়লাম পরিবারের কেউ আছে কিনা  । বৃদ্ধাটি জানান তার কেউ নেই । তিনি শুধু একা।

গায়ে পরনে  একটা লুঙ্গী ছাড়া আর কিছু নেই । যে বেডে শুয়ে আছে তাও তালিজোড়া । হাসপাতালে কতৃর্ক  যা দেয়  তা খেয়ে কোন রকম বেচেঁ আছে । তখন  তীব্র গরম পড়েছিল । ওয়ার্ডে রোগী বেশী এবং অভিভাবক    না থাকায়  তাদের  স্থান বারান্দায়  হয়েছে  ।
(চলবে)

বৃহস্পতিবার, ৬ জুলাই, ২০১৭

আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থা : গণতন্ত্র ও শাসন!


আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থাঃ গণতন্ত্র ও শাসন। -
বি.কে বিচিত্র
বিএসএস(অনার্স),এমএসএস,(প্রথম শ্রেণি), রাষ্ট্রবিজ্ঞান।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।

গণতন্ত্র’ শব্দটির ব্যুত্পত্তিগত অর্থ জনগণের ক্ষমতা। অর্থাত্ সরকার বা শাসন ব্যবস্থা যখন জন অভিমত দ্বারা পরিচালিত হয় তখন তাকে গণতন্ত্র বা গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা বলে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। তার মানে সরকার পরিচালনায় যখন জনগণের অভিমত প্রতিফলিত হয় তখন উক্ত শাসন ব্যবস্থাকে গণতান্ত্রিক সরকার বা গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা বলা হয়। আমেরিকার তদানীন্তন প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন তাঁর গেটিসবার্গ এড্রেস-এ বলেছিলেন, গণতন্ত্র জনগণের সরকার, জনগণের দ্বারা গঠিত সরকার এবং জনগণের জন্য সরকার। গণতন্ত্র সম্পর্কে বিভিন্ন জন বিভিন্ন অভিব্যক্তি প্রকাশ করে থাকেন। শুধু তাই নয়, সারা বিশ্ব আজ গণতন্ত্রের প্রশ্নে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে। অনেকে বলেন, প্রকৃতপক্ষে পৃথিবীতে গণতন্ত্র বা জনগণের শাসন বলে কিছু নেই।
তাদের মতে, ‘গণতন্ত্র’ একটি মুখরোচক শব্দ ছাড়া আর কিছুই নয়। পৃথিবীর কোথাও জনগণের শাসন আছে বলে তারা মনে করেন না। আসলে জনগণের নামে গুটিকয়েক ব্যক্তিই রাষ্ট্রের শাসনকার্য পরিচালনা করে থাকেন বলে তাঁরা মনে করেন। জনগণের অধিকার শুধু ভোট দেওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। ভোটের পরে শাসনকার্য পরিচালনায় জনগণের কোনো ভূমিকা আছে বলে তারা মনে করেন না। বিশেষজ্ঞদের মতে, গণতন্ত্র এমন একটি সরকার যেখানে প্রত্যেক সদস্যের অংশগ্রহণ রয়েছে। এ অংশগ্রহণ কথাটিও বিতর্কিত হয়ে পড়েছে।
এখন দেখা যাক, গণতান্ত্রিক সরকার বা গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় কিভাবে জনগণ সরকার পরিচালনায় বা শাসনকার্যে অংশগ্রহণ করে। আজ থেকে হাজার হাজার বছর পূর্বে প্রাচীন গ্রিস এবং রোমের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নগর রাষ্ট্রগুলোতে (City State) অতিমাত্রায় ক্ষুদ্র আয়তন এবং স্বল্প জনসংখ্যার কারণে সভা-সমিতির মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে সরাসরি জনগণের মতামত নেওয়া সম্ভব হয়েছিল। এটাকে প্রত্যক্ষ বা বিশুদ্ধ গণতন্ত্র বলা হয়। কালের পরিক্রমায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে প্রাচীন যুগের নগর রাষ্ট্রের বিলুপ্তি ঘটেছে। আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার জনক ম্যাকিয়াভেলি ষোড়শ শতাব্দীতে আধুনিক জাতীয় রাষ্ট্রের (National State) গোড়াপত্তন করেন। এ জাতীয় রাষ্ট্রের বিশাল আয়তন এবং বিপুল জনসংখ্যাহেতু প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র সম্ভব নয়। তাই নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাই জনগণের কল্যাণে রাষ্ট্রীয় শাসনকার্য পরিচালনা করেন। এ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদেরই জন অভিমত বা জনগণের কণ্ঠস্বর বলে মনে করা হয়। তারা নির্বাচিত হয়ে জনগণের স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করবে বলে আশা করা হয়। এটাকে পরোক্ষ বা প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্র বলা হয়। এ প্রতিনিধিত্বমূলক গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থাই আধুনিক গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার ভিত্তি।
তবে অষ্টাদশ শতাব্দীর ফরাসি রাষ্ট্র-দার্শনিক রুশো পরোক্ষ বা প্রতিনিধিত্বমূলক গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থাকে প্রকৃত অর্থে গণতন্ত্র বা গণতান্ত্রিক সরকার বলতে নারাজ। কারণ, তিনি মনে করেন, জন প্রতিনিধিরা মূলত জনস্বার্থে কাজ না করে তাদের আত্মস্বার্থ রক্ষার্থে শাসনকার্য পরিচালনা করেন। তাই তিনি প্রত্যক্ষ গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থাকে সমর্থন দিয়েছেন। যে ব্যবস্থায় জনস্বার্থ সুরক্ষিত থাকে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনক অ্যারিস্টটলের শিক্ষাগুরু প্লেটো গণতান্ত্রিক সরকার বা শাসন ব্যবস্থাকে সবচেয়ে অযোগ্যের শাসন বা সরকার ব্যবস্থা বলে আখ্যায়িত করেছেন। তাঁর মতে, যেহেতু গণতন্ত্র বেশির ভাগ জনগোষ্ঠীর দ্বারা পরিচালিত শাসন ব্যবস্থা, সেহেতু গণতন্ত্র কখনো উন্নতমানের শাসন ব্যবস্থা হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। কারণ, প্রত্যেক রাষ্ট্রেই বিদ্বান, সুপণ্ডিত এবং যোগ্য লোকের তুলনায় অযোগ্য, অশিক্ষিত এবং অজ্ঞ লোকের সংখ্যাই বেশি। সুতরাং বেশিরভাগ জনগোষ্ঠীর শাসন মানেই প্রকারান্তরে অযোগ্যের শাসন। যেখানে মুড়ি-মিশ্রি একদামে বিক্রি হয়। মাথা গণনার দ্বারা সবকিছু নির্ধারিত হয়। তাঁর মতে, গণতন্ত্র সংখ্যায় বিশ্বাসী, গুণে নয়। তাই গণতন্ত্র কখনো উন্নতমানের শাসন ব্যবস্থা হতে পারে না।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনক অ্যারিস্টটলও গণতন্ত্রকে স্বাগত জানাতে পারেননি। শুধু তাই নয়, তিনি গণতন্ত্রের বিকৃত রূপ জনতাতন্ত্রের ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কেও সতর্ক করে দিয়েছেন। আমরা জানি, ১৬৮৮ সালের গৌরবোজ্জ্বল বিপ্লবের পটভূমিতে ব্রিটেনে সংসদীয় গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার গোড়াপত্তন হয়। ১৬৮৮ সালের পূর্বে ব্রিটেনে নিরঙ্কুশ রাজতন্ত্র (Absolute Monarchy) বা অসীম ক্ষমতাধর রাজতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত ছিল। প্রশাসন অর্থ রাজা, আইন অর্থ রাজা, বিচার অর্থ রাজা, একব্যক্তির খেয়ালিপনার ভিত্তিতে কোটি কোটি মানুষের ভাগ্য নির্ধারিত হতো। পার্লামেন্টকে রাজা হাতের খেলনা হিসেবে ব্যবহার করতেন। সে সময়ের লং পার্লামেন্টের অবাঞ্ছিত স্মৃতি আজও ব্রিটেনবাসীর স্মৃতিতে নিষ্ঠুরভাবে গ্রথিত রয়েছে। যাই হোক, রাজার এ স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদে শুরু হয়ে গেল রাজার সঙ্গে পার্লামেন্টের প্রভাবশাল

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

সমন্বিত সরকারি চাকরির পরীক্ষা নেওয়ার দাবি চাকরি প্রার্থীদের / আহ্বান কর্তৃপক্ষকে।

 সমন্বিত সরকারি চাকরির পরীক্ষা নেওয়ার দাবি চাকরি প্রার্থীদের / আহ্বান কর্তৃপক্ষকে। বি.কে বিচিত্র, কলাম। বর্তমানে সরকারি চাকরি নেওয়ার পদ্ধতি ...